সিলেটপোস্টরিপোর্ট:নিয়োগ পরীক্ষায় ১ম স্থান অধিকারিনী শুধুমাত্র মহিলা হওয়ার কারণেই লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় ১ম হওয়ার নিপরও য়োগ পাননি শারমিন সুলতানা। এ ঘটনাটি ঘটেছে .গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অফিস সহকারী-কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগের জন্য। কলেজ অধ্যক্ষ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি গত ২ এপ্রিল ২০১৫ ইংরেজী তারিখে স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। বিজ্ঞপ্তিতে পদ সংখ্যা ১টি ও সরকারী বিধি মোতাবেক যোগ্যতা সম্পন্ন এবং কম্পিউটার ব্যবহারে পারদর্শী এমন প্রার্থীদের নিকট থেকে আবেদন আহবান করা হয়। যার ফলে অন্যান্য প্রার্থীর মত আবেদন করেছিলেন উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের শারমিন সুলতানা শাম্মি। পরবর্তীতে প্রার্থীর আবেদনের প্রেক্ষিতে ২৯ এপ্রিল ডাকযোগে প্রেরিত চিঠির মাধ্যমে ৫ই মে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানালে শারমিন সুলতানাসহ ২০ জন প্রার্থী লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। নিয়োগ পরীক্ষা শেষে ঐদিন অন্যান্য পদের মত উক্ত পদের ১ম স্থান অর্জনকারীর নাম ঘোষনা করা হয়। উপস্থিত পরীক্ষার্থীদের জানানো হয় যে উভয় পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে ১ম স্থান অধিকার করেছেন শারমিন সুলতানা,পরে আনুষ্টানিকভাবে পত্রের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হবে জানিয়ে সেদিনের মত কার্যক্রম শেষ হয়। কিন্তু কলেজ পরিচালনা কমিটির সভায় ১ম স্থান অধিকারীকে নিয়ে ঘোর বিরোধীতা করে নিয়োগ বাতিলের চাপ দেন সংশ্লিষ্টদের। এর কারণ হিসেবে তারা উল্লেখ করেন যেহেতু ১ম স্থান অধিকারী একজন মহিলা তাই তিনি উক্ত পদে কাজের যোগ্য নয় এবং মহিলা হওয়ায় তাকে নিয়োগ দেয়া হবে না। উল্লেখ্য পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে নারী কিংবা পুরুষের বিষয়টি আলাদাভাবে উল্লেখ করা হয়নি এবং যদি নারী হওয়ায় নিয়োগ দেয়া হবে না তবে তাকে পত্র মারফত আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল কেন সেই প্রশ্নটি কলেজের অধ্যক্ষ ইসমাইল উদ্দিনের সাথে কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল ঠিক, এখন দেখা যাচ্ছে মহিলা নিয়োগ দেওয়া হলে তিনি এ পদে অতিরিক্ত সময় ব্যায় করতে হবে। এজন্য তাকে এপদে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে না। উল্লেখ্য বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানে একই পদে স্কুলের অফিস সহায়ক পদে একজন মহিলা কর্মরত আছেন।
দেশে সরকার নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত এবং নারীর প্রতি বৈষম্য রোধে নানা পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করছে তখন নিজ যোগ্যতায় ১ম হওয়ার পরও শুধু নারী হওয়ার কারণে নিয়োগে বৈষম্যের শিকার হয়ে চাকুরী বঞ্চিত শারমিন সুলতানা ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে এরূপ অমানবিক ও অগ্রহণযোগ্য ঘটনার ক্ষোভ প্রকাশ করে শিক্ষা অধিদপ্তরসহ জেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট তার বক্তব্যগুলো ব্যক্ত করেছেন। নিয়োগ বিষয়ে মতামত জানার জন্য ঢাকাদক্ষিণ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ পরিচালনা কমিঠির সদস্য সাহাব উদ্দিন আহমদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, প্রতিষ্টানের নিকট^বর্তী সদস্য ও মহিলা শিক্ষা প্রতিষ্টানের এরকম মহিলাদের নিয়োগ দেওয়া উচিত, আর সে তার যোগ্যতায় ১ম স্থান হয়েছে। তাছাড়া ১ম স্থান অর্জনকারীকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য আমিও সমর্থন করেছি। একই প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেছেন পরিচালনা কমিটির আরেকজন সদস্য আবুল হোসেন । নিয়োগ কমিটির অন্যতম সদস্য সহকারী প্রভাষক তাসলিমা খাতুন বলেন, নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে যার যোগ্যতানুযায়ী বিবেচিত হয়েছে তিনি নিয়োগের অধিকারী, এটা করুণার বিষয় নয়, এটা অধিকার। তিনি আরো বলেন, যদি মহিলা নিয়োগ দেয়ার প্রয়োজন ছিলো না তাহলে পরীক্ষার পূর্বেই তাকে পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া উচিত ছিল।