সিলেটপোস্টরিপোর্ট:সিলেট ওসমানী মেডিকেল কোয়ার্টারের ছন্ধা ৫৫বাসাটি এখন ভন্ডপীরের আস্তানা ও জমজমাট তদবিরালয়। সরকারী এ বাসাকে কেন্দ্র করে চলছে তদবির তালাবি প্রতারনা। প্রতারনার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে ভোক্তভোগীদের লাখ লাখ টাকা। তাবিজ তমারে ও তদবির-তালাবির প্রতি সিলেটের অনেক মানুষ আস্তাশীল । আর এ সুযোগে সরকারী এ বাসায় ভন্ড মজিদপীর মজিদ গড়ে তুলেছে তদবিরালয় ও শেফাখানা। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অমিল, কেস-মোকদ্দমায় হার-জিত, প্রেম ও ভালবাসার মানুষকে পাইয়ে দেয়া, বিদেশ গমনেসহ সব সমস্যার সমাধান করে দেয়ার প্রতিশ্র“তি দিয়ে থাকেন কোয়ার্টারে থাকা কথিত পীর মজিদ মিয়া ওরফে আব্দুল মজিদ। আব্দুল মজিদ নিজেকে ‘আল্লাহর হুকুমপ্রাপ্ত’ তদবিরকারক দাবি করে মানুষের সমস্যা সমাধানের তদবির তালাবি করে থাকেন। সুনামগঞ্জের দোহালি গ্রামের আবুল তালুকদারের পুত্র মজিদ মিয়ার দুলাভাই সোয়াদ মিয়া সিলেট ওমসানী মেডিকেল কলেজ এর এমএসএস (অফিস সহায়ক)। সরকারী চাকরির সুবাদে সোয়াদ মিয়া বসবাসের নামে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের স্টাফ কোয়ার্টারের ছন্ধা ৫৫নং বাসাটি বাগিয়ে নেন। বাসায় তিনি নিজে থাকার পাশপাশি তার শশুর শাশুড়িসহ তাদের পরিবারের লোকদেরও নিয়ে আসেন। এদের মধ্যে সোয়াদ মিয়ার এক শ্যালক মজিদ মিয়া ওরপে আব্দুল মজিদ । অবিবাহিত মজিদ নিজেকে আল্লাহর কর্তৃক ‘আদিষ্ট’ পীর দাবি করে সরকারী এ বাসায় তদবিরালয় ও আসন খোলে বসেন। তাবিজ-তমার দেয়াসহ করতে থাকেন বিভিন্ন রোগবালাই ও সমস্যার সমাধান। তিনি আল্লাহর প্রিয় ও আল্লাহ কর্তুক আদিষ্ট, আল্লাহ তাকে হুকুম করেছেন মানুষের সমস্যা দেখার ও সমাধানের। এটা এ দাবি করে মজিদ নির্ধারিত টাকার (আরজির) বিনিময়ে সমস্যাগ্রস্থ মানুষদের তদািবর তালাবি, ঝাড়-ফোক ও তাবিজ-তমার দিয়ে থাকেন। সমস্যাগ্রস্থ মানুষজন সমস্যা সমাধনের বুকভরা আশা নিযে দিনরাত তার আসনে ভিড় জমান। কিন্তু সমস্যার কোন সমাধান হয় না । টাকাকড়ি ও সময় ব্যয় করে তারা প্রতারিত হয়ে থাকেন। গত দু’বছর ধরে ওসমানী মেডিকেল কলেজ কোয়ার্টারে থাকা ভন্ডপীর মজিদের প্রতারনার শিকার হয়ে আসছেন অনেক মানুষ । তারা সমাধান না পেয়ে আরজির টাকা ফেরত নিতে তার কাছে বারবার ধরনা দিয়েও টাকা ফেরত পাচ্ছেন না। অনেকে আবার লজ্ঝায় মূখ খোলতেও পারছেন না। এদের একজন শাম্মী নামের এক তরুনী। ঠিকানা ও পিতৃ-মাতৃপরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে সে জানায়, তার মনের মানুষকে পাইয়ে দেয়ার জন্য ওসমানী মেডিকেবর কলেজ কোয়ার্টারে থাকা ওই মজিদ পীরের দ্বারস্থ হয়েছিল । আরজির নামে মজিদ তার কাছে ৫০হাজার টাকা দাবি করেন । দরকষাকষি শেষে নির্ধারিত টাকা দিয়ে তালাবি করিয়েও কোন ফল পায়নি সে। মনের মানুষটি তাকে ছেড়ে অন্য মেয়েকে বিয়ে করায় সে হতাশ হয়ে পড়ে। মূখ খোলে কাউকে কিছু বলতে পারছে না সে। অন্য একজন শহরতলী ইসলামপুর মেজরটিলার এবাদ চৌধুরী। তিনি জানান, তার ভগ্নিপতি যুক্তরাজ্যে বসবাস করলেও নানা জঠিলতার কারনে দীর্ঘদিন বোনকে লন্ডনে নিতে পারছেন না। এজঠিলতা দূর করে বোনকে লন্ড যাওয়ার পথ সুগম করে দেয়ার জন্য এবাদ চৌধুরীর কাছ থেকে ১০হাজার টাকা নেন মজিদ। কিন্তু নির্ধারিত সময় এমনকি এর পরেও তার বোনের লন্ডন যাওয়া হয়নি। প্রতারিত এবাদ চৌধুরী পরে টাকা ফেরত চাইলে তালাবি বাবদ ব্যয় হয়ে গেছে বরৈ টাকা ফেরত দেননি মজিদ। এক অশালীন মহিলার অনিষ্ট থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য মজিদকে আড়াই হাজার টাকা দেন নগরীর সুবহানী ঘাটের দীপু। কিন্তু কোরন ফল না পেয়ে টাকা ফেরত চাইরে টাকা ফেরত দেন নি মজিদ। কথিত মজি পীরের এমন প্রতারানার শিকার হচ্ছেন হাজার হাজার ভোক্তভোগী মানুষ। আর সরকারী কোয়র্টার ব্যবহার করে মজিদ ও তার দুলাভাই হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। ইতোমেধ্যে মজিদ পরিবার তাদের গ্রামের বাড়িতে জায়গা জমি ক্রয়সহ পাকা ও দালানবাড়ি করতে সক্ষম হযেছে। ওসমানী মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের চোখ ফাকি দিয়ে মজিদ ও সোয়াদ তাদের প্রতারনা অব্যাহত রেছে। এ ব্যাপারে কথিত পীর মজিদের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে প্রতারনার অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তিনি মানুষের সমস্যা সমাধানে আল্লাহ কর্তক আদিষ্ট হ,েছেন এবং আল্লাহর হুকুম (আদেশ) পেয়েই তদবির-তালাবি করে আসছেন। আল্লাহ পক্ষ থেকে নিষেধ না পাওয়া পর্যন্ত মানুষের সমস্য সমাধানেতদবির- তালবি চালিয়ে যাবেন বলে জানান তিনি। সিলেট ওসমানী মেডিকেল করেজ এর এমএরএসএস সোয়াদ মিয়া মেডিকের কলেজ কোয়ার্টৎিারে তার শশুর শাশুড়ি পরিবার নিয়ে বসবাস করার কথা স্বীকার করে বরেন, সরকারী হোক আর বেসরকারী হোক ভাড়া দিযে বাসায় থেকে মজিদ তালাবি করলে আইনত অসুবিধার কোন কারন নেই।
সিলেট ওসমানী মেডিকেল কোয়ার্টারে ‘আল্লাহর আদিষ্ট’ কে সেই মজিদ ?
সিলেট পোস্ট ২৪ ডট কম
: আগষ্ট ১, ২০১৫ | ৮:৩৩ অপরাহ্ন
« « পূর্ববর্তী
পরবর্তী » »