রাজাকার হিসেবে অভিযুক্ত এই তিনজনের বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম গত ২৩ জুন শেষ হলে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন ট্রাইব্যুনাল। এই মামলায় রায় ঘোষণা করার পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আর কোনো মামলা রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ থাকবে না।গত ২১ এপ্রিল এই তিনজনের পক্ষে সাফাই গ্রহণের মাধ্যমে মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম শেষ হয়। এরপর চলে যুক্তিতর্ক।এর আগে ২৯ মার্চ এই তিন রাজাকারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। সিরাজ-লতিফ-আকরামের বিরুদ্ধে তদন্ত কর্মকর্তাসহ সাক্ষ্য দিয়েছেন মোট ৩২ জন।গত বছরের ৫ নভেম্বর এই তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর এ তিনজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়। এর আগের দিন ১৪ সেপ্টেম্বর ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ গত বছরের ১০ জুন এ তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। কচুয়া থানা পুলিশ গত ১১ জুন লতিফ তালুকদারকে গ্রেপ্তার করে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে।গত বছরের ১৯ জুন অন্য আসামি আকরাম হোসেন খানকে রাজশাহী থেকে গ্রেপ্তার করে ট্রাইব্যুনালে সোপর্দ করে পুলিশ। সর্বশেষ গত বছরের ২১ জুলাই রাতে পুলিশ সিরাজ মাস্টারকে গ্রেপ্তার করে।
সিরাজ মাস্টারের ফাঁসি, আকরামের আমৃত্যু কারাদণ্ড
সিলেটপোস্টরিপোর্ট:মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বাগেরহাটের রাজাকার কমান্ডার শেখ সিরাজুল ইসলাম ওরফে সিরাজ মাস্টারকে মৃত্যুদণ্ড ও খান আকরাম হোসেনকে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।মঙ্গলবার চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি আনোয়ারুল হকের সমন্বয়ে গঠিত ৩ সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ রায় দেন।হত্যা-গণহত্যা, আটক, অপহরণ, নির্যাতন এবং শতাধিক বাড়ি-ঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের সাতটি অভিযোগের মধ্যে ৬টিই প্রমাণিত হওয়ায় তাদের এ দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।এর আগে মঙ্গলবার বেলা ১১টা ৫ মিনিট থেকে রায় পড়া শুরু হয়। মোট ১৩৩ পৃষ্ঠার রায়ের সারসংক্ষেপ পড়েন বিচারকরা। রায় ঘোষণার জন্য বেলা ১১টার দিকে ট্রাইব্যুনালের এজলাসে আসেন বিচারকরা।রায়ের প্রথম অংশ পড়েন বিচারক প্যানেলের সদস্য বিচারপতি আনোয়ারুল হক। দ্বিতীয় অংশ পড়েন বিচারক প্যানেলের অপর সদস্য বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন এবং সবশেষে মূল অংশ সাজা ঘোষণা করেন চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম।সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে মামলার রায় ঘোষণার জন্য ট্রাইব্যুনালের হাজতখানা থেকে এজলাসকক্ষের আসামির কাঠগড়ায় ওঠানো হয় সিরাজ মাস্টার ও আকরামকে।এর আগে সকাল আটটার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে এনে তাদের ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় রাখা হয়।বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় হত্যা, গণহত্যা ও লুণ্ঠনসহ মোট সাতটি অভিযোগ আনা হয় তাদের বিরুদ্ধে।রমনা পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার (পেট্রোল) এসএম ইমানুল হক জানান, সিরাজ ও আকরামকে বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার পর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে প্রিজন ভ্যানে করে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়।ট্রাইব্যুনালে পৌঁছানোর পর যুদ্ধাপরাধ মামলার এই দুই আসামিকে ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় রাখা হয়।গত ৫ আগস্ট রায়ের জন্য এই দিন ধার্য করেছিলেন ট্রাইব্যুনাল। এই মামলার অন্য আসামি আবদুল লতিফ তালুকদার মারা যাওয়ায় তার বিরুদ্ধে সব কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়।ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৮ জুলাই মারা যান লতিফ তালুকদার (৭৫)।