সিলেটপোস্ট রিপোর্ট :বলিউডের সুপারস্টার আমির খানকে নিয়ে ভারতে চলছে তোলপাড়। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের কিংবদন্তী নেতা ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা আবুল কালাম আজাদের বংশধর তিনি। লোকসভা, বিধান সভা থেকে শুরু করে রাজনৈতিক অঙ্গন, চলচ্চিত্রাঙ্গন, সাধারণ মানুষ, মিডিয়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সর্বত্রই চলছে বিতর্কের ঝড়।বিশ্ব দরবারে ভারতকে নতুন করে ব্র্যান্ডিং করা আমির খান-শাহরুখ খানদের পক্ষে যেমন মানুষ অবস্থান নিয়েছে; তেমনি শিবসেনা, ক্ষমতাসীন বিজেপির মূল সংগঠন আরএসএস ও হিন্দুত্ববাদী উগ্র কিছু সংগঠন আমির খানের বিরুদ্ধে চরম হিংস্র অবস্থান নিয়েছে। আমির খান ইস্যুতে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। আবার দিব্যরাজ সিং শিশোদিয়া ও যোগেন্দ্র গোস্বামী নামের দুই আইনজীবী তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলাও করেছে।স্যুটিং করতে যাওয়া আমির খানের হোটেল যেমন ঘেরাওয়ের ঘটনা ঘটেছে, তাকে থাপ্পড় দেয়া হলে লাখ রুপি পুরস্কারের ঘোষণা দেয়া হয়েছে; তেমনি উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হিংস্র আক্রমণের হুমকির মুখেও তার পক্ষ নিয়েছে বিভিন্ন ব্যক্তিত্ব, রাজনীতিক ও সংগঠন। আমির খানকে রাষ্ট্রদ্রোহী হিসেবে যেমন অভিহিত করা হচ্ছে; তেমনি তাকে আধুনিক ভারতে ব্র্যান্ড হিসেবেও তুলে ধরা হচ্ছে। ভারতের সবকিছুকে ছাপিয়ে আমির খানের নাম হয়ে গেছে সর্বত্রই আলোচনা-সমালোচনার বিষয়বস্তু। ভারতের সর্বমহল স্বীকার করেন ভারতের অর্থনীতিতে বলিউড যথেষ্ট ভূমিকা রাখছে। গার্মেন্টস পোশাক রফতানি করে আমরা যেমন বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছি; তেমনি ভারত সারাবিশ্বে সিনেমা ফেরি করে বৈদেশিক মুদ্রা আনছে। মূলতঃ সেই বলিউডে চার খান (শাহরুখ খান, সালমান খান, আমির খান, সাইফ আলী খান) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।
ভারতের সাধারণ মানুষ আমির খানের পাশে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু মুসলমান হওয়ায় কিছু উগ্রবাদী হিন্দু আমির খানের নামে রাষ্ট্রদ্রোহের তকমা লেপ্টে দেয়ার চেষ্টা করছে। প্রশ্ন হলো হঠাৎ করে কেন এই অপচেষ্টা? যারা ফ্যাশন, লাইফ স্টাইলের মাধ্যমে ভারতকে আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত করে তুলছেন; বিশ্ব দরবারে ভারতীয়দের সম্মানিত করছেন; তাদের পিছনে কেন হিন্দুত্ববাদীরা কোমড় বেঁধে নামছেন? খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উগ্রবাদীদের আচরণে বিরক্ত হয়ে ভারতীয় বংশোদ্ভূত পর্তুগিজ প্রধানমন্ত্রী এন্তোনিও কস্তার, টাটা গ্র“পের মালিক রতন টাটা, রিলায়েন্স কোম্পানীর মালিক লক্ষি মিত্তালও একই ধরনের মন্তব্য করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে কেউ রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ তুলেনি। এমনকি জাতপাত ও গরুর গোশত ইস্যুতে ভারতের ৭৫ জন লেখক-বুদ্ধিজীবী-বিশিষ্টজন রাষ্ট্রীয় পুরস্কার ফেরত দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তাদের থাপ্পড় মারা এবং হোটেল ঘেরাও করে হত্যার চেষ্টা কেউ করেনি। প্রখ্যাত এক লেখিকা কয়েকদিন আগে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন ‘গরুর গোশত দিয়ে ভাত খেয়ে এলাম। পারলে আমাকে হত্যা করো’।ঘটনার সূত্রপাত আমির খানের স্ত্রী সনাতন ধর্মাবলম্বী কিরণের একটি উদ্বেগ নিয়ে। আমির খান এক টুইটে ভারতের অসহিষ্ণুতা নিয়ে নিজের উদ্বেগ জানিয়ে লিখেছেন, ‘ক্রমবর্ধমান অসহিষ্ণুতার ঘটনাগুলোয় তিনি আতঙ্কগ্রস্ত। নিজের সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে কিরণ (স্ত্রী) এতটাই উদ্বিগ্ন ছিল যে আমাকে একদিন জিজ্ঞাসা করেছিল, আমাদের কি ভারত ছেড়ে চলে যাওয়া উচিত।’ এরপরই শিবসেনাসহ উগ্রপন্থীরা তাঁর বিরুদ্ধে জোর প্রচারণা শুরু করে। পাঞ্জাবের শিবসেনা প্রধান ঘোষণা দেন ‘যে আমির খানের গালে চড় মারবে, তাঁকে এক লাখ রুপি পুরস্কার দেওয়া হবে’। বলিউডের রূপকথার নায়ক আমির খান মুসলমান হওয়ায় কি তার বিরুদ্ধে মহাত্মা গান্ধীর ভারতে এ রকম হিংসা-বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে? মহাত্মা গান্ধী ও নেহেরুর উত্তসূরী হলে কি তার বিরুদ্ধে এমন অপপ্রচার চালানো হতো? অসাম্প্রদায়িক দেশের দাবিদাররা কি বলেন? ভারতে শুধু মুসলিম বিদ্বেষ নয়, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মধ্যেও উচ্চবর্ণ নিম্নবর্ণ জ্ঞান করা হয়। ইসলাম ধর্ম কখনোই মানুষের মধ্যে এমন ভেদাভেদ প্রশ্রয় দেয় না। যার কারণে বাদশাহ থেকে শুরু করে রাস্তার ফকির পর্যন্ত একই কাতারে নামাজ আদায় করতে পারেন। আমির খান প্রবল ধর্মীয় অনুভূতিপ্রবণ। বলিউডের অন্যান্য হিরোরা যখন আমেরিকা, ইউরোপ যান অবকাশ যাপনে তখন আমির খান মাকে নিয়ে পবিত্র হজ পালনে যান সউদী আরব। একজন মুসলমান কখন হজব্রত করতে যান তা সহজেই অনুমেয়। বলিউডের মিষ্টার পারফেক্ট নায়ক খ্যাত আমির খান হজব্রত পালন করেছেন। হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েও আর দশটা মুসলমান পরিবারের সন্তানের মতোই সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। এটাই কি তার অপরাধ? বর্তমানে চিকিৎসার জন্য বিদেশে অবস্থানরত আমির খান শিবসেনার অপপ্রচারের জবাবে বলেছেন, ‘আমি বা আমার স্ত্রী কিরণ কারোরই দেশ ছাড়ার কোনো ইচ্ছে নেই। দেশ ছাড়ার কথা একবারও বলিনি। আমার স্ত্রী কিরণও বলেনি। ভারত আমার দেশ, আমি একে ভালোবাসি, এ দেশে জন্মে আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি এবং এখানেই আমি থাকব।’ তার এ বক্তব্যই প্রমাণ দেয় তিনি কত দেশপ্রেমিক। অবশ্য এর আগে ভারতের ক্রমবর্ধমান ধর্মীয় ও সামাজিক অসহিষ্ণুতার পরিপ্রেক্ষিতে কথা বলায় বলিউড বাদশাহ খ্যাত শাহরুখ খান ও অস্কার পুরস্কার প্রাপ্ত প্রখ্যাত সংগীত পরিচালক এ আর রহমানকেও এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছে। কোলকাতার শিল্পী কবির সুমন ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী আমির খানের পক্ষ নিয়ে হিন্দুত্ববাদী উগ্র নেতাদের বক্তব্যের কড়া জবাব দিয়েছেন। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জাতপাত, উচ্চবর্ণ নিম্নবর্ণ এবং সংখ্যালঘু তথা ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা নতুন কোনো ঘটনা নয়। বিগত জাতীয় নির্বাচনে বিজেপির ভূমিধস বিজয়ের পর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদীর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে সার্কভুক্ত দেশসহ বড় বড় দেশগুলোর রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধানদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। এ ঘটনায় অনেকের ধারণা ছিল বিজেপি হয়তো ভারতের রাজনীতি পাল্টে দেবে। আরএসএসের ঘরে জন্ম নিলেও বাস্তবতা ও পারিপার্শ্বিকতা মেনে নিয়ে ধর্মবর্ণ মত পথের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে। কংগ্রেসের ভুলনীতির প্রতিবাদে ভোট দিয়ে নতুন স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন দেশের সাধারণ মানুষ। কিন্তু বিজেপির অবস্থা যেন ‘কয়লা ধুইলেই ময়লা যায় না’ প্রবাদের মতোই। প্রথমে বাংলাদেশে গরু দেয়া বন্ধ, অতঃপর বিভিন্ন রাজ্যে গরুর গোশত খাওয়া নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। গরুর গোশত খাওয়াকে কেন্দ্র করে এক মুসলিমকে হত্যার পর তীব্র প্রতিবাদ ওঠে ভারত জুড়ে। বুদ্ধিজীবীরা এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করেন। কিন্তু বিজেপি সরকারের মন্ত্রীরা একের পর এক বক্তব্য দিয়ে গরু ইস্যুতে ভারতকে উত্তপ্ত করে তোলেন। মুসলিম হলেও ভারতে গরুর গোশত খাওয়া যেন অপরাধ! উগ্রবাদীদের একের পর এক হিংসাত্মক ঘটনায় বিজেপি সরকার নীরব ভূমিকা পালন করে। ‘খামোশ’ হয়ে যান মোদী। এর প্রথম প্রতিবাদ করেন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর ভাগনি নয়নতারা সেহগাল। তিনি প্রথম সাহিত্য একাডেমি পুরস্কার ফেরত দেয়ার ঘোষণা দেন। তাঁর দেখাদেখি একে একে ৭০ জনেরও বেশি বুদ্ধিজীবী-লেখক-শিল্পী-বিজ্ঞানী ইতিহাসবিদ তাঁদের রাষ্ট্রীয় পুরস্কার ফেরত দেয়ার ঘোষণা দেন। শুধু তাই নয়, উগ্রবাদীদের অসহিষ্ণুতা ও উগ্রতার বিরুদ্ধে তাঁরা রাজ্যে মহাসমাবেশ করেন। শান্তি ও সম্প্রীতির পক্ষে জনমত তৈরির চেষ্টা করেন। এ অবস্থা দেখে রাশিয়া ইতোমধ্যেই ভারতকে অনিরাপদ দেশ হিসেবে ঘোষণা দিয়ে তাদের নাগরিকদের নিরাপদে চলাচলের নির্দেশনা দিয়েছে। কিছু মিডিয়াও কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের উগ্রতা ও হিংস্রতার প্রতিবাদ করছেন। কিন্তু ‘চোরা না শোনো ধর্মের কাহিনী’ প্রবাদের মতো বালঠাকরের প্রতিষ্ঠিত শিবসেনা ও আরএসএস’র ভাবশিষ্যদের অবস্থা। তারা ক্ষমতায় আসার পরও হিন্দুত্ববাদী মতবাদ চাপিয়ে দেয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা থেকে বিরত থাকছেন না। বিজেপি সমর্থিত অনেক রাজ্য সরকারের মন্ত্রীরা মুসলমানদের হিন্দুধর্ম গ্রহণের আহবান জানানোর ধৃষ্টতা দেখাচ্ছেন। তারা ঘোষণা দিচ্ছেন, মুসলমানরা হিন্দুধর্ম গ্রহণ করলে ভারতের নাগরিকত্ব পাবেন। সাম্প্রদায়িক এই ধৃষ্টতার পরও নরেন্দ্র মোদী মুখে কুলুপ এঁেটছেন। সবাইকে নিয়ে ভারত গড়ার শ্লোগান যেন তিনি ভুলে গেছেন। ঢাকার বাংলা একাডেমীতে কয়েকদিন আগে অনুষ্ঠিত ‘ঢাকা লিট ফেস্টিভ্যালে’ এসেছিলেন ভারতের প্রখ্যাত কথা-সাহিত্যিক নয়নতারা সেহগাল। তিনি বলেছেন, যখন বিশ্বজুড়ে অস্থিরতা ও অসহিষ্ণুতার আগুন জ্বলছে, তখন তিনি সাহিত্য নিয়ে সুন্দর সুন্দর কথা বলতে ঢাকায় আসেননি। তিনি এসেছেন তাঁর দেশ ভারতে কী ঘটেছে, সেসব জানাতে। বহু ধর্ম ও বহু বর্ণ, সংস্কৃতির মানুষের বসবাসের ভারতে রাষ্ট্র বা সরকার নাগরিকদের ওপর হিন্দুত্ববাদ চাপিয়ে দিতে চাচ্ছে। এটা মেনে নেয়া যায় না। নেপালের সংবিধান সংশোধনের কারণে সে দেশের ওপর ভারতের দাদাগিরির বিষয়ও তিনি তুলে ধরেন বক্তৃতায়। আমির খানের সাম্প্রতিক মন্তব্য হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্র ভারতের চলমান ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার একটি বহিঃপ্রকাশ। ভারতে স্বাধীন মত প্রকাশকারী একজন শিক্ষাবিদকে কয়েকদিন আগে হত্যা করা হয়। এ ছাড়া গরুর গোশত নিয়ে গুজবের জেরে সহিংস হামলায় আরও দু’জন নিহত হন। শিশু ধর্ষণ, নারী ধর্ষণ সেখানে নিত্য-নৈমিত্তিক ঘটনা। এসব ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে ভারতজুড়ে সাহিত্যিক, চলচ্চিত্রকারসহ অন্তত ৭৫ বিশিষ্ট ব্যক্তি তাঁদের রাষ্ট্রীয় পুরস্কার ফিরিয়ে দেন। বিশিষ্টজনদের এই প্রতীকী প্রতিবাদ গোটা বিশ্বে সাড়া জাগিয়েছে। শুধু জাগেননি হিন্দুত্ববাদী নেতা ও তাদের সাগরেদরা। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম জাতীয়তাবাদী নেতা মুসলিম চিন্তাবিদ মাওলানা আবুল কালাম আজাদের বংশধর আমির খান। মাওলানা আবুল কালাম আজাদের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী গত জানুয়ারী মাসে কোলকাতায় ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে ‘পঞ্চম এপিজে কলকাতা সাহিত্য উৎসব’ করা হয়। ওই সভায় আলোচক হিসেবে বক্তৃতা করেন বলিউড তারকা আমির খান। নিজের পূর্ব পুরুষের পরিচয় তুলে ধরে তিনি বলেছিলেন, মাওলানা আজাদের কারণেই তিনি চলচ্চিত্রে আসার সুযোগ পেয়েছেন। আমার চাচা এবং বাবা চলচ্চিত্রে আসতে পেরেছিলেন তাঁর (মাওলানা আজাদ) কারণেই। আর ওনারা (বাবা-চাচা) না এলে আমারও হয়তো এ জগতে পা রাখা হতো না। চলচ্চিত্র জগতে কাজ করার বিষয়ে পরিবারের সবাই যখন বিরূপ মনোভাব ব্যক্ত করছিলেন; তখন মাওলানা আজাদই আমার চাচা নাসির হুসাইনকে বলেছিলেন, ‘মন যা চায় তাই করো’। হিন্দু ধর্মাবলম্বীকে বিয়ে করা এবং সিনেমার ব্যস্ত নায়ক হওয়ার পরও ইসলামী ধ্যান ধারণা লালন করেন আমির খান। নিজেকে একজন খাঁটি দেশপ্রেমিক হিসেবে তুলে ধরেন কথাবার্তা আর আচরণে। তাহলে কি মুসলমান হওয়ায় তার অপরাধ? লোকসভা ও বিধান সভায় তাকে নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক হয়েছে। অনেকেই তার নামে বিষোদগার করেছেন। বিশেষ করে আরএসএসের ভাবশীষ্য ও শিবসেনার নেতারা সংসদে তার নামে ‘বিষ’ ঢালেন। বাংলাদেশে কোনো সংখ্যালঘুর ওপর সন্ত্রাসীরা আক্রমণ করলে ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সকল স্তরের মানুষ তাদের পাশে দাঁড়িয়ে যান। সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন সবাই। সরকারও দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণে কসুর করে না। অথচ একি হাল ভারতে! ওই শিবসেনার উগ্রবাদীরা কি ভেবে দেখছেন এক সময় ওই দিল্লী-আগ্রা, মুম্বাই শাসন করতো মুসলমানরা? বলিউডের ইতিহাসে সেরা অভিনেতাদের একজন হলেন আমির খান। বিষয়ভিত্তিক গল্প আর নিখুঁত ছবি বাছাইয়ের জন্য তাকে মিস্টার পারফেকশনিস্ট বলা হয়। সম্মানিত ও প্রতিষ্ঠিত তারকাকে এবার চড় দিলেই দেয়া হবে এক লাখ রুপি নগদ পুরস্কার! ভারতের সাধারণ মানুষ কি কখনোই এমন উস্কানীকে প্রশ্রয় দেবে? উগ্র হিন্দুদের দল শিবসেনা আর আরএসএসের গর্ভে জন্ম নেয়া বিজেপি অহিংস গান্ধীর স্বপ্নের ভারতকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে? ‘পিকে’ খ্যাত আমির খান ভারতের মানুষের অহংকার গর্ব। সেই সোনার ছেলেকে শারীরিক লাঞ্ছনার ঘোষণা কি শুধু উর্বর মস্তিষ্কের প্রবঞ্চনা! নাকি উগ্রবাদী শিবসেনারা একশ’ ত্রিশ কোটি মানুষের স্বপ্নের ভারতকে নরক বানাতে চাচ্ছে? এসব প্রশ্ন আজ ভারতবাসীর কাছে।