দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার ৯নং সুরমা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনের প্রচারণা জমে উঠেছে। নির্বাচনের রাজনীতি এখন সুরমা ইউনিয়নের গ্রামে ফিরে গেছে। ভোটের হাওয়া বইছে এ গ্রামীণ জনপদে। ঝড় বইছে চায়ের কাপে।
আগামী ২৯ ডিসেম্বর উপ-নির্বাচনকে সামনে রেখে গণ-সংযোগে ব্যস্থ সময় পার করছেন ৬ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী।প্রার্থী-সমর্থকদের প্রচারনায় মুখরিত ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চল। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত সরকার দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নানা প্রতিশ্রুতির ফুলঝুড়িতে প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন। গ্রামের হাট-বাজার চায়ের টেবিলে প্রার্থীদের যোগ্যতা নিয়ে ভোটারদের মধ্যে চলছে চুলছেড়া বিশ্লেষন। প্রতীক বরাদ্দের পর চেয়ারম্যান প্রার্থীগণ প্রতিদিনই যোগ দিচ্ছেন এলাকার বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে। তাদের সমর্থকদের নিয়ে হাট-বাজারে কুশল বিনিময়ে মাঠ গরম করে তুলেছেন। পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকেও চলছে ব্যাপক প্রচারনা।
সুরমা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌশলী এমএ হালিম (বীরপ্রতীক) গত ২১শে সেপ্টেম্বর মূত্যুবরণ করায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদটি শুন্য হয়। এ শূন্য পদে আসন্ন উপ-নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে (নৌকা) প্রতীকে লড়ছেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক মরহুম ফজলুল হকের ছেলে, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা তাজুল ইসলাম। তার প্রতিদ্বন্ডি হিসেবে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠে রয়েছেন আরও ৩ জন প্রার্থী। এরা হলেন, স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার মামুনুর রশীদ (আনারস) প্রতীক, সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ হযরত আলী (চশমা) ও স্থানীয় আওয়ামিলীগ নেতা মোহাম্মদ শাহ জামাল (ঘোড়া) প্রতীকে। বিএনপি দলীয় ভাবে এই উপ-নির্বাচনে অংশ না নিলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠে উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুনুর অর রশিদ (মোটরসাইকেল) প্রতীক নিয়ে এবং জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোঃ ইকবাল হোসেন (লাঙ্গল) প্রতীক নিয়ে লড়ছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রার্থীদের পোস্টারে ছেয়ে গেছে ইউনিয়নের বিভিন্ন অঞ্চল। আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ও তাঁদের কর্মীরা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। বসে নেই চার স্বতন্ত্র প্রার্থী ও তাঁদের কর্মী-সমর্থকেরাও।ভোটারা তাঁদের প্রার্থীদের সামনে এলাকার বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরছেন। নির্বাচিত হলে প্রার্থীরা এসব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিচ্ছেন।
চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ও স্ব-স্ব কর্মীদের চোখে ঘুম নেই। ছুঁটছেন ভোটারদের দ্বারে-দ্বারে। চাইছেন ভোট ও দোয়া। স্থানীয় চা স্টল ও হোটেল-রেস্তোরায় চায়ের কাপে চলছে প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়।
সুরমা ইউনিয়নের কয়েকটি ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি গ্রামে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের পোস্টারে-পোস্টারে ছেয়ে গেছে। এ উপনির্বাচনে ছয়জন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী একে-অপরের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা বলেছেন, মূলত স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ ও আওয়ামিলীগের বিদ্রোহী সাবেক চেয়ারম্যান খন্দকার মামুনুর রশীদ প্রার্থী হয়ে-ই এ উপনির্বাচনকে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করে তুলেছেন। এছাড়া আওয়ামী লীগ মনোনীত তাজুল ইসলাম আওয়ামিলীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহ জামাল ও হযরত আলী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় এ নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে জানা গেছে।বসে নেই জাতীয় পার্টি মনোনীত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ইকবাল হোসেন। সব মিলিয়ে জমজমাট হয়ে উঠেছে সুরমা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানপদে এই উপনির্বাচন।
স্থানীয় একাধিক ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দলীয় প্রতীক বিবেচনায় নয়, এবার প্রার্থীর যোগ্যতা দেখেই নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। সুরমা ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ১৫ হাজার ৬৪ জন, এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭ হাজার ৬শ’৬৪ এবং মহিলা ভোটার ৭ হাজার ৪শ’ জন। ##