সিলেটপোস্ট ডেস্ক;:সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার খলাগ্রাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রহিমা বেগমের প্রত্যাহার ও শাস্তির দাবিতে উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন গ্রামবাসী।
গ্রামবাসীর পক্ষে ৪০ জনের স্বাক্ষর সম্বলিত স্মারকলিপিটি বুধবার (১৬ অক্টোবর) বিয়ানীবাজার উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে প্রদান করেন আলী নগর ইউনিয়নের আনসার কমান্ডার মো. বদরুল হক। এসময় তার সাথে স্কুলের অভিভাবকরা সাথে ছিলেন।
স্মারকলিপিতে খলাগ্রাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রহিমা বেগমের বিভিন্ন অপকর্মের বিষয় তুলে ধরে বলা হয়, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রহিমা বেগম উক্ত পদে আসার পর হতে বিদ্যালয়ে বিভিন্ন অনিয়মত ও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হচ্ছে। তিনি সহকারী শিক্ষক থাকাবস্থায় ইতোপূর্বে ৩ জন প্রধান শিক্ষকের সাথে খুটিনাটি বিষয়ে বাক-বিতন্ডায় জড়ান ও দুর্ব্যবহার করেন। পর্যায়ক্রমে এসব শিক্ষকরা অন্যত্র বদলি হয়ে যান। তাই রিহিমা বেগম ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। দায়িত্বপালনকালে তিনি যথাসময়ে বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকেন না এবং বিদ্যালয় ছুটির কোন বিধি মেনে চলেন না।
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সাথে রহিমা বেগমের দুর্ব্যবহার ও নানা দুর্নীতির কথা তুলে ধরে বদরুল হক বলেন, গত ০৮/১০/২০২৪ইং তারিখে সহকারী শিক্ষকদের সাথে বাকবিতন্ডার জের ধরে তিনি বিকাল ৫টা পর্যন্ত শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের বিদ্যালয়ে জিম্মি করে রাখেন। অভিভাবক হিসেবে আমি কারন জানতে চাইলে তিনি আমাকে হুমকি দিয়ে কথা বলেন কারন উনার বাবার বাড়ি বিদ্যালয়ের সন্নিকটে হওয়ায় এবং উনার সন্ত্রাসী দুই ভাইয়ের সহযোগিতায় উনার খেয়ালীমতো বিদ্যালয় পরিচালনা করছেন। স্লিপ কমিটির সাথে আলোচনা না করেই তিনি স্লিপের যাবতীয় টাকা দিয়ে ইনার ইচ্ছামতো খরচ করছেন। এছাড়া উনার মামা, চাচা ও ভাইদের দোকান থেকে সস্তায় জিনিসপত্র ক্রয় করে টাকা আত্মসাত করছেন। এই বিদ্যালয়ে থাকা অবস্থায় তিনি দুটি সিএনজি ও অটোরিক্সা গাড়ি ক্রয় করেন যার যাবতীয় হিসাব-নিকাশ অফিস কক্ষে করে থাকেন এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে খারাপ আচরন ও মারধরের ঘটনা প্রায়ই ঘটে থাকে যা গ্রামের মুরব্বিয়ানরা অবগত আছেন এবং এ বিষয়ে বিভিন্ন সালিশীও বসে। এসব কোমলমতী শিক্ষার্থীদের জন্য হিতকর নয়। উনার ছেলে অত্র বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। বিভিন্ন প্রতিযোগিতা ও ফলাফলের ক্ষেত্রে নিজের ছেলের পক্ষপাতি নিয়ে সর্বক্ষেত্রে প্রথম স্থান দিয়ে থাকেন যা অন্যান্য শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশে বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের মনে অনেক ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। কিন্তু উনার ভয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা কিছু বলতে পারে না। এসব অন্যায় অনিয়মের কারণে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হচ্ছে। উনার বাবার বাড়ি বিদ্যালয়ের পাশে থাকার কারণে তিনি যেকোন সময় সেখানে অবস্থা করেন। প্রায় প্রতিদিনই সেখানে যাতায়াত করে থাকেন এতে শ্রেণি কার্যক্রম অনেকটাই ব্যহত হয়। প্রধান শিক্ষিক রহিমা বেগমের আচার-আচরণে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। যে কোন সময় এ ক্ষোভের বিষ্ফোরণ ঘটে নানা অঘটন ঘটতে পারে।
স্মারকলিপিতে খলাগ্রাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির নিমিত্তে অনতিবিলম্বে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রহিমা বেগমের অপসারণ এবং তদন্ত সাপেক্ষে তার শাস্তির ব্যবস্থাকরে অবিলম্বে একজন দক্ষ, চরিত্রবান ও বিজ্ঞ প্রধান শিক্ষককে অত্র বিদ্যালয়ে পদায়নের জোর দাবি জানানো হয়।