সংবাদ শিরোনাম
হবিগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক এমপি ব্যারিস্টার সুমনকে গ্রেফতার করেছে মিরপুর থানা পুলিশ  » «   ফটো সাংবাদিক আজমলের মাতার মৃত্যুতে সিলেট বিভাগীয় অনলাইন প্রেসক্লাবের শোক  » «   কুলাউড়ায় সাবেক সচিবের বাগান বাড়ি থেকে লাশ উদ্ধার  » «   জনগনের সরকার প্রতিষ্টা হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত বিএনপির আন্দোলন চলবে : জিকে গাউছ  » «   সাবেক মন্ত্রী ইমরান আহমদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ  » «   কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান কালা মিয়া গ্রেফতার  » «   সিলেটে পিপি ফয়েজের কক্ষে তালা পিপি মুজিব লাঞ্চিত    » «   বাংলাদেশের নতুন পথচলায় সাংবাদিকরা অগ্রণী ভূমিকা রাখবেন : এসএমপি কমিশনার রেজাউল করিম  » «   পশ্চিম ধরাধরপুর মসজিদকে এক ব্যক্তির কবল থেকে মুক্ত করার দাবি-ধরাধরপুর এলাকাবাসী  » «   ড. ইউনুসকে সময় দিতে চান তারেক রহমান-সিলেটে এম এ মালিক  » «   নিয়োগ প্রাপ্ত পাবলিক প্রসিকিউটর এড. ফয়েজকে প্রত্যাখ্যান করে সিলেট আইনজীবী ফোরামের প্রতিবাদ সমাবেশ  » «   তারেক রহমান আইনী ব্যবস্থার মাধ্যমে অচিরে দেশে ফিরে আসবেন”-এম এ মালেক  » «   আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী মারা গেছেন  » «   জাফলংয়ের ইসিএভুক্ত এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৭০০ নৌকাসহ বালু ও পাথর জব্দ করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত  » «   সিলেটের দুই হোটেলের বিরুদ্ধে মালপত্র আটকে হয়রানির অভিযোগ যুক্তরাজ্য প্রবাসীর  » «  

কৃষিতে জলবায়ুঝুঁকি হ্রাসে গৃহীত উদ্যোগ বাস্তবায়নে করণীয়

মোতাহার হোসেন::বাতাসে কার্বন নিঃসরণ বৃদ্ধি পাওয়ায় পৃথিবীর উঞ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে বরফ আচ্ছাদিত অঞ্চলের বরফ গলার পরিমাণ বাড়ছে। এতে বাড়ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ও জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি। এ কারণে বাংলাদেশসহ সমগ্র বিশ্বেই পরিবেশে, প্রকৃতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য বাংলাদেশ মোটেও দায়ী নয়। অথচ তুলনামূলক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে  বাংলাদেশ। ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা জার্মান ওয়াচে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ১০টি দেশের মধ্যে প্রথম সারিতে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। এছাড়াও ব্রিটিশ গবেষণা সংস্থা ম্যাপলক্র্যাফটের প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ ১৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান প্রথম।

এ পর্যায়ে বায়ুমণ্ডল এবং সমুদ্রের উষ্ণায়ন, বিশ্ব পানি চক্রে ভারসাম্যহীনতা, তুষারপাত, বরফ গলা, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ও জলবায়ুজনিত দুর্যোগগুলোকে মানব সৃষ্ট প্রভাব হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। কৃষি উৎপাদনে জলবায়ুর প্রভাব নিবিড়ভাবে জড়িত। বিরূপ জলবায়ু থাকলে ফসল ভালো হবে না। অতিবৃষ্টি, খরা, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড়, শীলাবৃষ্টি ছাড়াও অন্যান্য সাময়িক ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ। এ অবস্থায় কৃষি সম্প্রসারণের সকল পর্যায়ে দুর্যোগ মোকাবিলার কৌশল রপ্ত করে বাস্তবক্ষেত্রে প্রয়োগের কার্যক্রম গ্রহণ না করলে কৃষিতে আগামীদিনে ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে। এটা ঠিক যে দুর্যোগকে ঠেকিয়ে রাখা যাবে না, তবে যথাযথ পরিকল্পনা ও অভিযোজনের মাধ্যমে ফসল উৎপাদনে দুর্যোগের ঝুঁকি অনেকটা কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কৃষিতে সর্বাধিক প্রভাব পড়বে। ফসল উৎপাদনে বিশেষ করে চারটি প্রধান ফসল যথাক্রমে ভুট্টা, ধান, গম এবং সয়াবিন উৎপাদনে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এ অবস্থায় অদূর ভবিষ্যতে খাদ্য নিরাপত্তায় সমস্যা দেখা দিতে পারে। কারণ ভবিষ্যতে উষ্ণায়নের তীব্রতা এবং অভিযোজন ব্যবস্থার কার্যকারিতার উপর নির্ভর করবে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়টি। কারণ  ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা এবং আবহাওয়ার ধরনে পরিবর্তন হওয়ায় প্রায়শই খরা, তাপপ্রবাহ এবং বন্যায় ফসলের উৎপাদন কমিয়ে দিচ্ছে। একইসাথে বিভিন্ন অঞ্চলে ফসল নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে। দুভার্গ্যজনক হলেও সত্য, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন জনিত ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হলেও জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য যারা দায়ী তারা এ জন্য ক্ষতিপূরণ দিচ্ছেনা। তাই বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে জলবায়ু ঝুঁকি থেকে পরিত্রাণে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হচ্ছে। জলবায়ু ঝুঁকি থেকে পরিত্রাণে বাংলাদেশের গৃহীত কর্মপরিকল্পনার সুফল পাচ্ছে দেশের মানুষ। আবার বৈশ্বিক পরিমন্ডলে ইতোমধ্যে জলবায়ু ঝুঁকি নিরসনে বাংলাদেশ বিশ্বের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।

বাংলাদেশ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মূলত বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে। এতে ক্রমাগত সমুদ্রপৃষ্টের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে অ্যান্টার্কটিকাসহ হিমালয়ের বরফ গলা জলের প্রবাহে সৃষ্টি হচ্ছে ব্যাপক বন্যাসহ নদ-নদীর দিক পরিবর্তন। এর সঙ্গে যোগ হচ্ছে নদ-নদীর ভাঙন। পাশাপাশি সমুদ্রের পানিতে বাড়ছে লবণাক্ততা। এতে দেশের সমুদ্র উপকূলের মানুষ বিশুদ্ধ পানীয় জলের অভাবে লবণাক্ত পানি পানে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। নারীরা সন্তান ধারণের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে। এছাড়া তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে দেশের বরেন্দ্র অঞ্চলে  গ্রীষ্ম মৌসুমে মরুকরণের সৃষ্টি হচ্ছে। এ বিষয়ে বিশ্বখ্যাত মরুভূমি গবেষকরা বাংলাদেশকে সতর্ক করে আসছেন বারবার। দেশের এ সমস্যাগুলোকে দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে তা সমাধানে ন্যাশনাল এনভাইরনমেন্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যাকশন প্ল্যান’ প্রণয়ন করে তা ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন শুরু করেছে।

শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা ছাড়াও ঋতুভেদে বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, টর্নেডো, নদীভাঙন, ভূমিধস প্রভৃতি মিলিয়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা বলা হয় বাংলাদেশকে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশের ঋতুচক্রের হেরফেরের পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগেরও হেরফের ঘটছে। অর্থাৎ আগের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সেই স্বাভাবিক চিত্র এখন আর আমাদের নজরে পড়ে না। এর প্রধান কারণ তাপমাত্রার পরিবর্তন বা বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি; এর প্রভাবে বায়ুপ্রবাহ, বৃষ্টিপাত, সমুদ্রস্তরের উচ্চতা, মরুকরণ প্রভৃতির মাধ্যমে দেশে জলবায়ু পরিবর্তন ঘটছে, পরিবর্তন হচ্ছে আমাদের চিরচেনা ষড়ঋতুতে। সাহিত্যে বাংলাদেশকে ষড়ঋতুর দেশ বা বছরে ছয় ঋতুর বর্ণনা থাকলেও বাস্তব অর্থে এখন ষড় ঋতু পরিলক্ষতি হয়না। বৃষ্টির সময়ে বৃষ্টি  না হয়ে অন্য সময় হচ্ছে, কখনও অতিবৃষ্টি আবার কখনো বন্যা হচ্ছে। অন্যদিকে.বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ায় নদনদীর পানি প্রবাহ কমে যাচ্ছে। ভাঙ্গনের ফলে নদীর গতিপথ পরির্বতন হচ্ছে। অন্যদিকে নদীর পানির বিশাল চাপ না থাকায় সমুদ্রের লোনাপানি যতটুকু এলাকাজুড়ে আটকে থাকার কথা, ততটুকু জায়গায় থাকছে না। পানির প্রবাহ কম থাকার কারণে সমুদ্রের লোনাপানি স্থলভাগের কাছাকাছি চলে আসছে। ফলে উপকূলীয় অঞ্চলের বিপুল এলাকায় ক্রমাগত লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে ।

বিশেষজ্ঞদের অভিমত , বাংলাদেশে কম বৃষ্টিপাতের কারণে উপকূলীয় এলাকায় লবণাক্ততার সমস্যা দিনদিন আরও প্রকট হয়ে উঠছে। এদিকে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ও লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ায় সুন্দরবনের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। বিশেষ করে বাইন ও সুন্দরী গাছসহ বিভিন্ন গাছের আগামরা রোগ দেখা দিয়েছে। তাতে আবার নানা ধরনের পাতা ও ফুল খেকো বিভিন্ন রকমের কীটের আবির্ভাবও ঘটেছে। এ ব্যাপারে জলবায়ু বিশেষজ্ঞদের অভিমত, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বা জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে ইকোসিস্টেমের বিষয়টি সরাসরি জড়িত। তাই দেশের কোনো অঞ্চলের জলবায়ুর পরিবর্তন হলে সে অঞ্চলের প্রাণিকুল অথবা কীটপতঙ্গের জীবনধারায়ও পরিবর্তন আসে, প্রাণীর অস্তিত্বও সংকটে পড়ে। এমনও হয় যে, সেসব অঞ্চলের প্রাণিকুলের বিলুপ্তি ঘটে নতুন প্রাণিকুলের সৃষ্টি হয়। মূলত এভাবেই ওই অঞ্চলের জলবায়ুর প্রভাবে বিভিন্ন প্রজাতির কীটের আবির্ভাব ও পূর্বের প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটছে।

দেশীয় প্রজাতির গাছগাছালি হারিয়ে যাওয়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে বিদেশি গাছের আগ্রাসন। বিদেশি এসব গাছ ও লতাগুল্মের ক্রমাগত বর্ধনের ফলে গত কয়েক দশকে বাংলাদেশের প্রকৃতি থেকে ধীরে ধীরে হারিয়ে গেছে প্রায় এক হাজার প্রজাতির নিজস্ব গাছ। উদ্বেগজনক বিষয় হচ্ছে, বিদেশি আগ্রাসী গাছগুলো এখন আমাদের দেশীয় প্রজাতির গাছ হিসেবে শনাক্ত হচ্ছে। যেমন: সেগুন, মেহগনি, আকাশমণি, রেইনট্রি, বাবলা, চাম্বল, শিশু, খয়ের ও ইউক্যালিপ্টাস গাছ এখন অনেকের কাছে দেশীয় প্রজাতির গাছ হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে। অথচ এগুলো ভিনদেশি গাছ। এসব গাছের কারণে দেশীয় প্রজাতির গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ প্রজাতির গাছগুলোর জন্য প্রচুর জায়গার দরকার হয়। এগুলো দেশি গাছের তুলনায় অনেক দ্রুত মাটি থেকে বেশি পরিমাণে পুষ্টি শুষে নেয়। এছাড়াও আশপাশে দেশীয় প্রজাতির গাছের বেড়ে ওঠাকে ব্যাহত করে। মূলত এ গাছগুলো ব্রিটিশ আমলে এ অঞ্চলে বিভিন্নভাবে আনা হয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কৃষি নির্ভর বাংলাদেশের কৃষিতে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এর ফলে কৃষিকে নানামুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। একই সঙ্গে এতে বিরূপ প্রভাব পড়ছে কৃষি, চাষাবাদ ও উৎপাদন ব্যবস্থার ওপর। তদুপরি অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, খরা এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে বহু প্রজাতির ফসলের উৎপাদন কমে যাচ্ছে। আবার আগাছা, পরগাছা,  রোগবালাই ও পোকা মাকড়ের আক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের অঞ্চলভেদে মাটির  গুনাগুণ এবং উপাদানেও তারতম্য ঘটছে। ফলে ফসলের প্রত্যাশিত উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ইরি-বোরো উৎপাদনে প্রচুর সেচের পানির প্রয়োজন হচ্ছে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জমিগুলোয় লবণাক্ততার কারণে সেচে ও চাষাবাদে বিপত্তি ঘটছে। আবার লবণাক্ততা বৃদ্ধির কারণে চিংড়ি চাষেও ধস নেমেছে।

অন্যদিকে, উত্তরাঞ্চলে সেচের পানিতে আরেক বিপত্তি ঘটছে। সেখানকার ভূগর্ভস্থ পানিতে আর্সেনিকের মাত্রা বেশি হওয়ায় ফসলের মাধ্যমে তা মানবদেহে প্রবেশ করছে। এছাড়া উত্তরাঞ্চলের ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় ফসলের জমিতে চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ করা যাচ্ছে না। এ কারণে ফসল উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ছে। এমতাঅবস্থায় দ্রুতই জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি কমানো না গেলে শুধু দেশের নিমাঞ্চলই প্লাবিত হবে না একই সঙ্গে মরুকরণের ঝুঁকিতও বাড়বে। অন্যদিকে এর বিরূপ প্রভাব পড়বে আমাদের বৃক্ষরাজি, বনজ, জলজ ও কৃষিজ, মৎস্য সম্পদের ওপরে।

কাজেই জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলা এবং এর বিরূপ প্রভাব থেকে পরিত্রাণে আমাদের নিজস্ব সম্পদ. মেধা,অভিজ্ঞতা, যোগ্যতা দিয়ে নিরন্তর গবেষণার মাধ্যমে নিজেদের ভাগ্যোন্নয়নের পথরেখা নির্মাণ, মুক্তির পথ খুঁজতে হবে। একই সঙ্গে নদ-নদীর দূষণ, দখল রোধ এবং নাব্যতা ফিরিয়ে আনা জরুরি। পাশাপাশি দেশের আনাচে-কানাচে খালি জায়গায় বনায়ন সৃষ্টি করতে হবে এবং অনাবাদি ও  পতিত জমি দ্রুত চাষের আওতায় আনতে হবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। পরিবেশ দূষণ বা বায়ুদূষণ ঘটে এমন ধরনের কাজকর্ম থেকেও আমাদের নিবৃত থাকতে হবে। একই সঙ্গে অতিমাত্রায় কার্বন নিঃসরনণকারি তথা শিল্পোন্নত দেশগুলোর কাছে প্রামাণ্যচিত্রসহ আমাদের আর্জি তুলে ধরতে হবে। এসব করা গেলে রাতারাতি জলবায়ু পরিবর্তন রোধ করা সম্ভব না হলেও কিছুটা পরিত্রাণ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জলবায়ুর ভয়াবহ অভিঘাতে বিপর্যস্ত আমাদের জীবনব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তনের পাশাপাশি কৃষি, প্রকৃতি ও পরিবেশে পরিবর্তন আসছে। এই পরিবর্তন ও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আমাদের কৃষি, পরিবেশ, প্রতিবেশ, প্রকৃতিকে রক্ষায় একাদিকে  জনসচেতনতা বাড়াতে হবে অন্যদিকে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে প্রয়োজন  কৃষির গবেষণা। প্রত্যাশা থাকবে সরকার এই বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে কৃষিজ উৎপাদন তথা কৃষিতে প্রযুক্তির প্রয়োগ ও অঞ্চলভিত্তিক ফল-ফসল উৎপাদন, বিপণনে অধিকতর মনোযোগী হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজনে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ কৃষির উপর জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবের ঝুঁকি হ্রাসে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা যায়।

লেখক : সাংবাদিক ও সাধারণ সম্পাদক-বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরাম

পিআইডি ফিচার

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়াার করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Developed by:

.