সিলেটপোস্টরিপোর্ট:পৌরবাসীর ভালবাসা ও সহযোগিতা এবং আমার প্রিয় সহকর্মী কাউন্সিলর, কর্মকর্তা কর্মচারিদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও ঘামের বিনিময়ে ‘সি’ গ্রেডের একটি পৌরসভাকে এক দশকের ব্যবধানে ‘এ’ গ্রেডে উন্নীত হয়েছে। গত ১৩ বছর ধরে পৌর এলাকায় যে উন্নয়ন কাজ হয়েছে সেটাই অনেকের গাত্রহাদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমার উন্নয়ন কাজের ফলে অনেকেরই ভবিষ্যতের অনেক স্বপ্ন, সাধ পূরণের বাধা হওয়ায় ষড়যন্ত্রকারীরা নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন। এভাবেই নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করলেন গোলাপগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জাকারিয়া আহমদ পাপলু। তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট উদ্দেশ্য প্রণোদিত। তিনি এ ধরণের বক্তব্যে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান। রোববার সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মেয়র পাপলু। কয়েকজন ব্যক্তি ২৬ মে ‘আমরা গোলাপগঞ্জবাসী’র ব্যানারে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মেয়র পাপলুর বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বজন প্রীতির অভিযোগ আনা হয়। এর জবাবে এ সংবাদ সম্মেলন করেন মেয়র পাপলু।সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মেয়র পাপলু বলেন, পৌরবাসীর ভোটে নির্বাচিত একজন জন প্রতিনিধি হিসাবে অত্যন্ত সুনাম ও দায়িত্বশীলতার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছি।
তিনি বলেন, আমার পৌর এলাকায় মাত্র ১০ শতাংশ রাস্তা পাকা ছিল মাত্র ১৩ বছরের ব্যবধানে সেখানে ৯৫ শতাংশ রাস্তা পাকাকরণ করা হয়েছে। এছাড়া এই সময়ে নতুন নতুন রাস্তাঘাট নির্মাণ, ড্রেন নির্মাণ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নির্মাণ ও প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ, উন্নয়নে অনুদান, বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুতায়ন, সড়ক বাতি স্থাপন, জলাবদ্ধতা নিরসন. শৌচাগার নির্মাণসহ নাগরিক সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। পৌর শহরের একমাত্র কিচেন মার্কেটে কিছুদিন আগেও ময়লা কাদা মাটি জলাবদ্ধতায় একাকার ছিল। নাগরিকরা সেখানে হাট বাজার করতে গিয়ে মারাত্মত দুর্ভোগে পড়তেন। এই কিচেন মার্কেটের প্রায় এক কোটি টাকা খরচ করে কিচেন মার্কেট পাকাকরণ ও পরিকল্পিতভাবে ড্রেন নির্মাণ করেছি। ফলে এখন আরও সেখানে নাগরিকদের দুর্ভোগ পেতে হচ্ছে না।তিনি আরো বলেন, ২০০২ সাল থেকে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত করেই যাচ্ছে। তাদের ষড়যন্ত্রের ফলে একজন নির্বাচিত চেয়ারম্যান কিংবা মেয়র হয়েও আমাকে কারাবরণ করতে হয়েছে। বিভিন্ন সময় চরম নাজেহাল হতে হয়েছে। কিন্তু সেই মহলটি ক্ষান্ত হচ্ছেনা। ষড়যন্ত্রকারীরা এখনো সক্রিয় আছে। সময় সময় তাদের চেহারা বদল হয়। তারা বিভিন্ন নামে আবির্ভূত হয়। আমার বিরুদ্ধে নানা অপ প্রচারে লিপ্ত হয়। প্রতিপক্ষের অভিযোগ খন্ডন করে সংবাদ সম্মেলনে মেয়র পাপলু বলেন, পৌরসভার সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান বর্তমান কাউন্সিলর হেলালুজ্জামান হেলাল, কাউন্সিলর রুহিন আহমদ খান, ‘তথাকথিত’ গোলাপগঞ্জ বাজার বণিক সমিতির সভাপতি হাফিজুর রহমান চৌধুরী, সেক্রেটারি আব্দুল আহাদ, মাদরাসা শিক্ষক মাওলানা আবদুল জলিলের বিরুদ্ধে আমি নাকি মামলা দায়ের করেছি।এছাড়াও তারা কয়েকজন পৌরসভার সাবেক কর্মচারির নাম উল্লেখ করে অভিযোগ করেছেন কোন কারণ ছাড়াই আমি তাদের চাকুরিচ্যুত করেছি। তারা আরো অভিযোগ করেছেন, পৌর এলাকায় নিয়মের চেয়ে অতিরিক্ত কর আদায় করা হচ্ছে। তারা বলেছেন দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে আমি বিপুল অর্থের মালিক হয়েছি। তাদের এসকল অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট এবং হাস্যকর।সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, সরকার কিংবা দাতা সংস্থা শুধুমাত্র উন্নয়ন প্রকল্পে টাকা বরাদ্দ দিয়ে থাকে। অন্য কোন খাতে উক্ত টাকা খরচ করার কোন আইনগত সুযোগ নেই। পৌরসভার কর্মকর্তা কর্মচারিদের বেতন ভাতা, বিদ্যুত বিল, টেলিফোন বিল, যাতায়াত খরচ, পৌরসভার আসবাবপত্র ক্রয়, শহরের মযলা আবর্জনা অপসারণ, শহর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার লক্ষে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের বেতন ভাতা, বিভিন্ন সার্টিফিকেট-সনদ ছাপানো অর্থাৎ পৌরসভার অভ্যন্তরীণ সকল প্রকার খরচ পৌরসভার নিজস্ব তহবিল থেকে সংস্থান করতে হয়। অথচ, পৌর এলাকার ভেতরে অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিরা কর দিতে অনিহা দেখাচ্ছেন। তাদের কাছে পৌর সভার কোটি কোটি টাকা কর বকেয়া আছে। তারা কর পরিশোধ না করে বরং তারা পৌর কর নিয়ে অপ প্রচার করছেন। পৌরসভার উন্নয়নের স্বার্থে কর আদায় প্রয়োজন বিধায় আমি অতিতে কিছু কর খেলাপিদের প্রতি কঠোর হয়েছিলাম। কিন্তু খেলাপিরা কর পরিশোধ না করে উল্টো পৌর কর নিয়ে নানা অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। এরই অংশ হিসাবে সংবাদ সম্মেলন করে কর খেলাপীরা এসব মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি তার বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগও অস্বীকার করেন।সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সেলিম আহমদ ফলিক, পৌরসভাপর ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জহির উদ্দিন সেলিম, ৪নং ওয়ার্ডের গোলাম মোস্তফা মুছা, ৬নং ওয়ার্ডের মো. আলা উদ্দিন, ৮নং ওয়ার্ডের মো. ফারুক আলী, ৯নং ওয়ার্ডের নজরুল ইসলাম, সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুফিয়া বেগম, মেহেরুন বেগম, গোলাপগঞ্জ সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মকসুদ হোসেন বাবুল, পৌর নাগরিক কমিটির সহ সভাপতি আব্দুল কাহের সোয়া মিয়া, সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী, গোলাপগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী এডহক কমিটির সদস্য সচিব আব্দুল হান্নান, পৌর নাগরিক কমিটির সদস্য আব্দুল কাদির, মাসুম আহমদ ও আব্দুল মুহিত প্রমুখ।