নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেটপোস্ট২৪ডটকম : জলাবদ্ধতার আতঙ্ক পিছু ছাড়ছেনা সিলেট নগরবাসীর। প্রতিবছরই বর্ষা মৌসুম আসার আগেই জলাবদ্ধতা নিরসনে সিলেট সিটি করপোশেন (সিসিক) তোড়জোর শুরু করে। নির্বাচিত মেয়রবিহীন নগরবাসী এবার জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা পাবেন কি না তা নিয়ে শঙ্কিত। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, নগরীর উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ছড়া ও খাল দীর্ঘদিন ধরে পরিষ্কার না করায় ‘ময়লার ভাগাড়ে’ পরিণত হয়েছে এগুলো। ফলে বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাষনের চেয়ে পানি উপচে নগরীকে জলাবদ্ধতার দিকে ঠেলে দিবে। নগরবাসীর আশঙ্কার সাথে মিল রেখে সিসিক কর্তৃপক্ষও একই আশঙ্কা করছেন।
সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএম কিববিয়া হত্যা মামলার চার্জশীটভূক্ত আসামী হয়ে গত সাড়ে ৩ মাস যাবত কারাবন্দি সিসিকের সাময়িক বরখাস্তকৃত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। ফলে দীর্ঘদিন বন্ধ রয়েছে ছড়া, খাল ও নালা উদ্ধার অভিযান। এ কারণে নগরীর অধিকাংশ ছড়া, ড্রেন ও নালায় ময়লার স্তুপ জমেছে। তবে নগরবাসীকে জলাবদ্ধতার কবল থেকে বাঁচাতে কাউন্সিলরদের সহায়তায় সিসিকের উদ্যেগে শুরু হয়েছে ‘আবর্জনাম্ক্তু’ অভিযান।
সরেজমিনে দেখা যায়, নগর ভবনের মাত্র কয়েক’শ গজের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে সিলেট নগরীর পানি নিষ্কাষনের অন্যতম বলরামের খালটি। নগরীতে যে ৭টি বড় খাল রয়েছে তার একটি বলরামের খাল। কিন্তু এটি যে একটি খাল দেখে বুঝার উপায় নেই। দীর্ঘদিন ধরে এটি পরিষ্কার না করায় ময়লা আবর্জনায় ভরে গেছে। খালের মাঝখানেই গজিয়ে উঠেছে গাছপালা। মাছের পরিবর্তে এখানে বসতি ময়লা আবর্জনার।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, পাশের গুলশান হোটেলের কমিউনিটি সেন্টারের সব আবর্জনা ফেলা হয় এই খালে। ফলে বাড়ছে দুর্ভোগ, বাড়ছে এলাকাবাসীর ক্ষোভ। খালের মধ্যে ময়লা-আবর্জনা ফেলায় দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়। এর আশেপাশের এলাকায় যাতায়াত করতেও সমস্যার সৃষ্টি হয়।
এছাড়া নগরীর অন্যান্য ছড়া ও খালের অবস্থা একই রকম। আবাসিক এলাকার বর্জ্য থেকে শুরু করে বাড়ির ময়লা আবর্জনাও ঠাই পায় এ সকল ছড়া ও খালে। দীর্ঘদিন ধরে এ সকল আবর্জনা পরিষ্কার না করায় বিলীন হতে চলেছে পানি প্রবাহ। ফলে ছড়া ও নালায় গজিয়ে উঠছে গাছগাছালি। আর এ সুযোগে প্রভাবশালীরা ছড়া ও নালার অংশকে নিজেদের ‘সম্পত্তি’ বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। ফলে ছড়া ও নালা অবৈধদখলমুক্ত করতে বেগ পেতে হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের।
গত বর্ষা মৌসুমের আগে ছড়া-খাল ও ড্রেনগুলো পরিষ্কার করায় একটি বছর জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পায় নগরবাসী। কিন্তু এবার আবর্জনা পরিষ্কার না করায় জলাবদ্ধতার শঙ্কায় মানুষ। নগরবাসীরা জানান, বর্ষা মৌসুমে ড্রেনের ময়লা-আবর্জনা ফলে স্থানীয় বাসা-বাড়িতে পানি উঠে যায়। এর ফলে মাত্রাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
জনবল সংকটসহ নানা সমস্যায় ছড়া-খালগুলো পরিষ্কার করা সম্ভব হয়নি জানিয়ে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী নিজেও বললেন এবার জলাবদ্ধতায় পড়তে হবে পারে নগরবাসীকে।
সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান বলেন, ময়লা-আবর্জনা ও জলাবদ্ধতা দূরীকরণে উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে মেয়র না থাকায় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও কাউন্সিলরদের দ্বারা এ অভিযান চালানো হচ্ছে।