সিলেট পোস্ট রিপোর্ট : দুপুরে প্রতিবাদ সভা করে অসৌজন্যমূলক আচরণ, হামলা ও নির্যাতনের সঙ্গে যেসব পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য জড়িত তাদের খুঁজে বের করে এক সপ্তাহের মধ্যে বিচারের আওতায় আনার আল্টিমেটাম দেয় বাংলাদেশ ক্রাইম অ্যাসোসিয়েশন (ক্রাব)গণমাধ্যমের অপরাধবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠনের এই আল্টিমেটামের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তাদের আরেক সাংবাদিককে পিটিয়েছে পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার বিকেল চারটার দিকে রাজধানীর গুলশান থানাধীন ভারতীয় দূতাবাসের সামনে। সেখানে দৈনিক সকালের খবর পত্রিকার অপরাধবিষয়ক প্রতিবেদক এমদাদুল হক খানকে মারধর করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পুলিশের মারধরে এমদাদ গুরুতর আহত হয়েছেন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, ভিসার জন্য পূর্বে জমা দেওয়া পাসপোর্টটি আনার জন্য ভারতীয় দূতাবাসে যান এমদাদ।
দূতাবাসের ভেতরে প্রবেশের সময় পুলিশ তার পরিচয় জানতে চায়। পরিচয় জানার পরও সবাইকে পুলিশ ঢুকতে দিলেও এমদাদকে ঢুকতে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় পুলিশের কাছে ভেতরে ঢুকতে না দেওয়ার কারণ জানতে চান এমদাদ। পুলিশ এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে মারধর করে। এমদাদ বলেন, দূতাবাসের সামনে দায়িত্ব পালনকারী পুলিশ কনস্টেবল মালেক, জুয়েল, সিদ্দিক, মুক্তার তাকে কিলঘুষি দিতে থাকে। তাদের সঙ্গে এএসআই জালাল ও সেলিমও পরবর্তীতে যোগ দেন।
এরপর পুলিশ তাকে গাড়িতে তুলে বসিয়ে রাখে। এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সিনিয়র সাংবাদিক, গুলশান থানার ওসি ও দূতাবাসের কর্মকর্তারা সেখানে গিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করেন। সম্প্রতি সমকাল পত্রিকার অপরাধবিষয়ক সিনিয়র রিপোর্টার ইন্দ্রজিৎ সরকারকেও একইভাবে রাজধানীর মগবাজার মোড়ে পুলিশ লাঞ্ছিত করে।
এই ঘটনাসহ সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ, হামলা ও নির্যাতনের সঙ্গে যেসব পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যরা জড়িত তাদের খুঁজে বের করতে আজ দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সামনে এক প্রতিবাদ সভা করে বাংলাদেশ ক্রাইম অ্যাসোসিয়েশন (ক্রাব) সংগঠনটির সভাপতি ইফাত হোসেন ঈশা এক সপ্তাহের মধ্যে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার আল্টিমেটাম দেন।
ক্রাব সদস্য পিনাকী দাশ গুপ্ত, মাহবুব আলম লাভলু, সাখাওয়াত হোসেন কাওসার ও ইন্দ্রজিৎ সরকারের সঙ্গে পুলিশের অসৌজন্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে এ সভা হয়। প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেন, পুলিশ প্রশাসন আমাদের কাছে সময় চেয়েছেন এবং আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন। কিন্তু প্রশাসনকে আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই যতক্ষণ না পর্যন্ত সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করার অভিযোগে অভিযুক্ত দের বিচারের আওতায় আনা না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
এ সময় বক্তারা প্রতিবাদ সভায় পুলিশের ভালো খবর বর্জন করে তাদের দুর্নীতিমূলক সংবাদ প্রচার করার আহ্বান জানান। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনি গণমাধ্যম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। আপনি যদি সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ না করেন তাদের আপনাকে এর মাশুল বহন করতে হবে।’
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আপনি সাংবাদিকদের বলেছেন সাংবাদিকদের ওপর হামলা হলে তাৎক্ষণিকভাবে আমাকে জানাবেন আমি এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। কিন্তু এ পর্যন্ত যত সাংবাদিক নির্যাতিত হয়েছে আপনি তার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেননি। এতেই বোঝা যায় আপনার কাজের স্গে কথার কোনো মিল নাই।’ আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ইফাত হোসেন ঈশার সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় আরো বক্তব্য দেন- সংগঠনের সাবেক সভাপতি মাহবুবল আলম লাভলু, জাহাঙ্গীর আলম, সাংবাদিক নেতা পিনাকী দাশ গুপ্ত, সাখাওয়াত হোসেন কাওসার, মামুনুর রশিদ, ডিআরইউ’র সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস হোসেন প্রমুখ।