সিলেট পোস্ট রিপোর্ট : গ্রুপ পর্বে শুরুটা হয়েছিল চরম বাজেভাবে। প্লেট পর্বে ওঠা নিয়ে দেখা দিয়েছিল সংশয়। তবে যে দলের মেন্টর লিজেন্ড শচীন টেন্ডুলকার, প্রধান কোচ গ্রেট রিকিং পন্টিং, তাদের ঘুরে দাঁড়ানোটা ছিল সময়ের ব্যাপার মাত্র। হ্যাঁ, শেষ পর্যন্ত শচীন-পন্টিংয়ের মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) অষ্টম আসরের শিরোপা জিতে নিয়েছে।
দ্বিতীয়বারের মত মারকুটে ভার্সনের এই শিরোপা জিতে বলা যায় বাজিমাতই করলেন শচীন-পন্টিং। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স প্রথমবার অবশ্য শিরোপা পেয়েছিল শচীনের হাত ধরে, তখন তিনি ব্যাট হাতে খেলতেন। আর এবার ডাগ-আউটে বসে পন্টিংয়ের সঙ্গে মিলে কুপোকাত করলেন মহেন্দ্র সিং ধোনির চেন্নাই সুপার কিংসকে। রবিবার রাতে ক্রিকেট ভূ-স্বর্গখ্যাত কলকাতার ইডেন গার্ডেনে ৪১ রানের বড় ব্যবধানে জয় পায় মুম্বাই। জয়ের ভিতটা অবশ্য গড়ে দেন ব্যাট হাতে রোহিত শর্মারা। নির্ধারিত ওভারে ৫ উইকেটে তারা ২০২ রানের বিশাল লক্ষ্য ছুঁড়ে দেন ধোনিদের সামনে।
সেটি শেষ পর্যন্ত টপকাতে পারেনি ধোনি বাহিনী। ৮ উইকেটে ১৬১ রানে থেমে ৪১ রানের বড় পরাজয়ে শিরোপা হাতছাড়া হয় তাদের।
হাইভোল্টেজের এই ম্যাচে টস জিতে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন চেন্নাই দলপতি মহেন্দ্র সিং ধোনি। রোহিত শর্মা, কাইরন পোলার্ড, আম্বাতি রাইডু আর লিন্ডে সিমন্সের ব্যাটে ভর করে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ৫ উইকেট হারিয়ে ২০২ রান তোলে।
শুরুতে উইকেট হারালেও দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে সংহত হয় মুম্বাই। দলীয় ১২০ রানের মাথায় সাজঘরে ফেরেন রোহিত শর্মা। ব্রাভোর স্লোয়ার বলে রবীন্দ্র জাদেজার তালুবন্দি হওয়ার আগে তিনি করেন ৫০ রান। ২৬ বলের ইনিংসে রোহিত ৬টি চার আর দুটি ছক্কা হাকান। রোহিত আর সিমন্স মিলে ১১৯ রানের জুটি গড়েন।
ডোয়াইন স্মিথের করা পরের ওভারের প্রথম বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন সিমন্স। বিদায় নেওয়ার আগে ৪৫ বলে ৬৮ রানের একটি দারুণ ইনিংস খেলেন ক্যারিবীয় ওপেনার। তার ইনিংসে ছিল ৮টি চারের পাশাপাশি তিনটি ছয়।
এরপর প্রথম দিকে ধীর গতিতে শুরু করলেও শেষ দিকে জ্বলে উঠেন পোলার্ড। ১৯তম ওভারে মোহিত শর্মার বলে রায়নার হাতে ধরা পড়ার আগে ১৮ বলে দুটি চারের পাশাপাশি ৩টি ছক্কা হাঁকিয়ে এ ক্যারিবিয়ান করেন ৩৬ রান। আম্বাতি রাইডু ২৪ বলে তিনটি ছয়ে ৩৬ এবং হরভাজন সিং ৬ রানে অপরাজিত থেকে ইনিংস শেষ করেন ২০২ রানে। ৩৬ রান খরচায় ২ উইকেট নিয়ে চেন্নাইয়ের সেরা বোলার ডোয়াইন ব্রাভো। ২০৩ রানের জবাবে শুরুটা একদমই ভালো হয়নি চেন্নাইয়ের। দলীয় ২২ রানে মাইক হাসি মাত্র ৪ রান করে বিদায় নেন। তিন নম্বরে নামা সুরেশ রায়না ১৯ বলে তিনটি চার, এক ছক্কায় ২৮ রান করে বিদায় নেন।
একপ্রান্ত আগলে রাখলেও দলকে জেতানোর মত যথেষ্ট ছিল না ওপেনার স্মিথের ৫৭ রান। ক্যারিবীয়ান এ হার্ডহিটার ৪৮ বলে ৯টি চার,এক ছক্কায় এই রান করেন। চেন্নাই দলপতি ধোনির ব্যাট থেকে আসে ১৩ বলে ১৮ রান। শেষদিকে মোহিত শর্মা ৭ বলে ২১ রান করে অপরাজিত থাকেন। শেষ ওভারে তারা ২১ রান নিলেও পরাজয় রুখতে পারেননি। শিরোপা হাতছাড়া হয় চেন্নাই সুপার কিংসের। মুম্বাইয়ের পক্ষে ৪ ওভার বল করে ২৫ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন ম্যাকক্লেনাঘ্যান। এছাড়া দুটি উইকেট নেন মালিঙ্গা এবং হরভজন সিং। ম্যাচসেরা হয়েছেন রোহিত শর্মা।