সংবাদ শিরোনাম
কোটা আন্দোলন ঘিরে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ আরও ২ শিক্ষার্থীর মৃত্যু  » «   সিলেটে আজ সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরদিন ভোর ৬টা পর্যন্ত কারফিউ  » «   আগামী ২৮ জুলাই পর্যন্ত আপাতত ফেসবুকসহ সব ধরনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও বন্ধ থাকবে-প্রতিমন্ত্রী পলক  » «   আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ চলাকালে সিয়াম নামে এক তরুণ নিহত  » «   কোটা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনকারীদের পক্ষে বিক্ষোভের ঘোষণা হেফাজতে ইসলামের  » «   আগামীকাল সারাদেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’কর্মসূচি ঘোষণা  » «   দোয়ারাবাজারে প্রকাশ্যে চলছে টিলা কাটার মহোৎসব! নিরব প্রশাসন  » «   মাদকের ভয়ালগ্রাস থেকে আমাদের সন্তানদের বাচাতে হবে- বিভাগীয় কমিশনার আহমদ ছিদ্দীকী  » «   আরিফ হত্যা মামলায় ৩৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নিপু কারাগারে  » «   ধর্মপাশার মুগরাইন হাওরে গোসল করতে নেমে ডুবে শাশুড়ি ও তার অন্তঃসত্ত্বা পুত্রবধূর মৃত্য  » «   তৃতীয় দফা বন্যার মুখোমুখি সুনামগঞ্জের হাওরপাড়ের লাখ লাখ মানুষজন  » «   বন্যায়ও থেমে নেই ভারত থেকে অবৈধভাবে আসা চিনির চোরাচালান  » «   সিলেটে নতুন পুলিশ সুপার এর যোগদান  » «   র‌্যাব সদস্যরা দেশের যেকোন সংকটময় মূহুূর্তে সব সময়ই জনগনের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে -র‌্যাব মহাপরিচালক  » «   সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার জন্য একজন গানম্যান নিয়োগ পেলেন ব্যারিস্টার সুমন  » «  

রাজশাহীতে ফেসবুকে গালির জেরে সংঘর্ষ-গোলাগুলি: নিহত ১

121সিলেটপোস্টরিপোর্ট:রাজশাহী সিটি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি শামসুল আরেফিন রবিন ইডিয়ট ও রাসকেল বলে ফেসবুকে আপত্তিকর মন্তব্য করেছিলেন। নগর ছাত্রলীগ সদস্য আশিকুর রহমান তুহিনকে উদ্দেশ্যে করে ওই মন্তব্য করেন তিনি। আর এরই জের ধরে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে রবিন ও তুহিন গ্রুপের মধ্যে  সংঘর্ষ ও গোলাগুলি হয়। এর মাঝে পড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান নগর ছাত্রদল কর্মী  জীবন শেখ। নগরীর রাণীবাজার এলাকায় বন্ধু রবিনের হয়ে প্রতিপক্ষের উপর হামলা চালাতে গিয়েছিলেন জীবন।শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করা হয়।রামেক হাসপাতালের চিকিৎসক সাইফুল ইসলাম জানান, জীবনের বাম চোখের নিচে গুলি লেগে বাম কানের পিছন দিক দিয়ে বের হয়ে গেছে। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়েছ ।বোয়ালিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহামুদুর রহমান জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ছাত্রলীগের দুটি গ্রুপের মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে  এই সংঘর্ষ হয়েছে। তবে পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় নিহতের পবিবার মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এতে এখনো কাউকে আটক করা হয়নি। মামলা দায়েরের পর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। ছাত্রলীগ নাকি ছাত্রদল নিহত জীবন ছাত্রলীগ নাকি ছাত্রদল কর্মী এ নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক। প্রথম থেকেই পুলিশ নিহত জীবনকে ছাত্রলীগ কর্মী বলে দাবি করলেও এখন সুর পাল্টেছে। তাদের দাবি, তিনি মহানগর ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন।বোয়ালিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহামুদুর রহমান জানান, জীবন ছাত্রদলের কর্মী ছিলেন। তার বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর হামলাসহ নাশকতার কমপক্ষে ৫টি মামলা রয়েছে। তবে সেসব মামলায় তিনি জামিনে রয়েছেন।এর আগে নগরীর লোকনাথ স্কুল মার্কেট এলাকায় জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ চলাকালে জীবন পায়ে গুলিব্ধি হয়েছিলেন। তবে সম্প্রতি তিনি সিটি কলেজ ছাত্রলীগের নেতা রবিনের সঙ্গেই উঠা-বসা করতেন। তারই হয়ে বৃহস্পতিবার এই সংঘর্ষে যোগ দেন জীবন।বিষয়টি স্বীকার করেছে জীবনের পরিবারও। তার বাবা রাজশাহী সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা বিভাগের কর্মী ও হোসেন শেখ জানান, জীবন শেখ ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। নবম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়ার পর জীবন আর স্কুলে যায়নি। পরে সে নিজেই পছন্দ করে বিয়ে করেছে।তার পাঁচ মাস বয়সি জিয়াউর রহমান জিদান নামের একটি ছেলে রয়েছে। রবিন তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। বৃহস্পতিবার রাতে রবিনই তাকে ফোন করে ডেকে নিয়েছিলো।তবে জীবন ছাত্রদল নয় ছাত্রলীগের রাজনীতি করতেন বলে দাবি করেছেন সিটি কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহম্মেদ শান্ত। তিনি বলেন, আগে জীবন ছাত্রদলের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিলেন। কিন্তু গত বছরের ৫ জানুয়ারীর পর থেকে তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। এছাড়া তিনি  যুবদল বিংবা সেচ্ছাসেবক দলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বলেও দাবি করছে সংশ্লিষ্ট একাধিক সুত্র। তবে তা নাকচ করে দিয়েছেন বোয়ালিয়া থানা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস ওয়াহিদ রনি ও মহানগর সেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক মোজাদ্দেদ জামানী সুমন।হাসপাতাল ছেড়ে পালালো ছাত্রলীগ কর্মীএ ঘটনায় গ্রেফতার এড়াতে হাসপাতাল ছেড়ে পালিয়েছেন সংঘর্ষে আহত ছাত্রলীগকর্মী রেদওয়ানুল রহমান তুষার। গুরুতর অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতেই তাকে রামেক হাসপাতালের ৮ নম্বর ওয়ার্ড ভর্তি করা হয়। আটক হতে পারেন এমন আতঙ্কে ভর্তির কিছুক্ষণ পর সেখান থেকে পালিয়ে যান তুষার।তুষার ছাত্রলীগ নেতা আশিকুর রহমান তুহিনের ভাই। তিনিও ওই সংঘর্ষে অংশ নেন। প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহতও হন তিনি।রামেক হাসপাতালের একাধিক জানায়, যে কোনো হত্যক‍াণ্ডের পর প্রতিপক্ষের কেউ হাসপাতালে ভর্তি হলে তাদের পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসা দেয়া হয়। কিন্তু ছাত্রলীগকর্মী তুষারকে পুলিশ হেফাজতে নেয়নি। আর এ সুযোগেই রাতেই হাসপাতাল ছেড়ে পালিয়ে যান তিনি।পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, ফেসবুকের একটি স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে সিটি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি শামসুল আরেফিন রবিন গ্রুপের সঙ্গে নগর ছাত্রলীগ সদস্য আশিকুর রহমান তুহিনের গ্রুপের গোলাগুলির সময় এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। জীবন শেখ ওই সংঘর্ষে যোগ দিয়েছিলেন রবিন গ্রুপের ভাড়াটিয়া হিসেবে।ছাত্রলীগ নেতা রবিনরাসিকের বিএনপি সমর্থিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবু বক্কর কিনুর ছেলে। আর তুহিন বোয়ালিয়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আতিকুর রহমান কালু ছেলে।এর আগে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর গণকপাড়া এলাকায় ছাত্রলীগ নেতা রবিন ও তুহিন গুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। প্রায় ২০ মিনিট ধরে চলা সংঘর্ষে দু পক্ষের মধ্যে গোলাগুলিও হয়।ভাংচুর করা হয় কয়েকটি দোকানপাটও।এতে গুলিবিদ্ধ হন সেচ্ছাসেবকদল কর্মী  জীবন শেখ। এ ঘটনায় আহত হন ছাত্রলীগ কর্মী তুষারসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন। এদের জীবন ও তুষারকে দ্রুত রামেক হাসপাতালে নেয়া হলে জরুরী বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসকরা জীবনকে মৃত ঘোষণা করেন। আর তুষারকে নেয়া হয় ৮ নম্বর ওয়ার্ডে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়াার করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Developed by:

.