সিলেটপোস্টরিপোর্ট:শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকা অবস্থায় তড়িঘড়ি করে পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বাছাই কমিটি। শাবির সাবেক ভিসি মোসলেহ উদ্দিনের তরিকা মোতাবেক এভাবে বন্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগের আয়োজনকে সম্পূর্ণ অনৈতিক বলে দাবি করেছেন শিক্ষকরা। ওই ভিসি এভাবেই বন্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ে অবৈধভাবে নিয়োগ দিতেন। সেই তরিকা আবারো শাবিতে চালু হচ্ছে বলে অনেক শিক্ষক অভিযোগ করেছেন। এ নিয়োগের মাধ্যমে শাবিতে আরো একটি কলঙ্কের দাগ দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন অনেকেই।জানা গেছে, শিক্ষক নিয়োগের জন্য ৪ জুন বাছাই বোর্ডের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। গ্রীষ্মকালীন ছুটি চলাকালে বাছাই বোর্ডের ওই তারিখ নির্ধারণ করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকার্তা-কর্মচারীরা নিয়োগের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।সমাজ বিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক পদে একটি শূন্য পদের বিপরীতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. আব্দুল গনি তার পছন্দের পার্থীকে নিয়োগ দিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চাপ দিয়ে বাছাই বোর্ডের তারিখ নির্ধারণ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ৫ জুন থেকে প্রফেসর আব্দুল গনির বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্বের মেয়াদকাল শেষ হবে। তাই তড়িঘড়ি করে ওই নিয়োগ দেয়া হচ্ছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্র বলছে।বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব শেষ হওয়ার আগের দিন ও গ্রীষ্মকালীন ছুটি চলাকালীন বাছাই বোর্ডের তারিখ নির্ধারণকে অযৌক্তিক ও নিয়মবহির্ভুত বলে দাবি করেছেন বিভিন্ন ফোরামের শিক্ষকরা। কার স্বার্থে বন্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ে এভাবে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।নিজের পার্থীকে নিয়োগ দিতে তড়িঘড়ি করে বাছাই বোর্ডের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে। সূত্র আরো জানায়, একটি শূন্য পদের বিপরীতে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হলেও কমপক্ষে ৩ জনকে নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ও মুক্তচিন্তা চর্চায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষক পরিষদের আহবায়ক প্রফেসর ড. আকতারুল ইসলাম বলেন, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের বাছাই বোর্ডের তারিখ নির্ধারণের বিষয়টি আমি শুনেছি। বর্তমান ভারপ্রাপ্ত ভিসি কিভাবে এই বিষটির অনুমতি দিলেন তা বোধগম্য নয়। এই মুহুর্তে এত তড়িঘড়ি করে শিক্ষক নিয়োগের অনুমতি দেওয়ার কোন প্রয়োজন ছিলনা এবং এটা সন্দেহজনক। কার স্বার্থে এটা দেওয়া হল আমার তা জানা নাই। আমি মনে করি এটা কোন জ্ঞানী সিদ্ধান্ত নয়। বিশ্ববিদ্যালয় খোলা থাকা অবস্থায় এধরণের সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত ছিল। বন্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ে তড়িঘড়ি নিয়োগ সন্দেহের সৃষ্টি করেছে।বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী শিক্ষক পরিষদের আহবায়ক প্রফেসর ড. সাজেদুল করিম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ছুটিতে আছেন এ অবস্থায় যিনি দায়িত্বে আছেন তিনি কোন ক্ষমতাবলে এভাবে তড়িঘড়ি করে নিয়োগ দিচ্ছেন তা বোধগম্য নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে কি এমন দরকার হয়ে পড়লো যে বন্ধ থাকা অবস্থায় তড়িঘড়ি করে এভাবে নিয়োগ দিতে হবে। এভাবে ভিসিবিহীন বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগের বিষয়টি সম্পূর্ণ অনৈতিক বলে আমরা মনে করি। এমন প্রশ্নবিদ্ধ নিয়োগ কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।সামাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. আব্দুল গনিকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, আমি নিয়োগ দেয়ার কে? এব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জিজ্ঞাসা করুন। আপনার পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দেয়ার জন্যই এমন তড়িঘড়ি নিয়োগ দেয়া হচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।শাবির ভারপ্রাপ্ত ভিসি প্রফেসর ড. ইলিয়াস উদ্দিন বিশ্বাস বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ও ছুটি বলে কিছু নেই। নিয়োগ দেয়ার বিষয়টি একটি রুটিন ওয়ার্ক। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও আমাকে নিয়মিত অফিস করতে হচ্ছে। শাবি ভিসি ছুটিতে আছেন এমন সময় এ নিয়োগ দেয়া হচ্ছে কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তিনি ছুটিতে থাকলেও আমাকে নিয়োগসহ সবকিছুর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কেউ ছুটিতে থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়তো আর বন্ধ থাকেবে না। বিশ্ববিদ্যালয় চালাতে হবে।
শাবিতে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
সিলেট পোস্ট ২৪ ডট কম
: জুন ১, ২০১৫ | ২:১৭ অপরাহ্ন
« « পূর্ববর্তী
পরবর্তী » »