বুলবুল আহমেদ, নবীগঞ্জ প্রতিনিধি::মুসলিম উম্মার দ্বিতীয় প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদ-উল আজহা আর মাত্র কয়েক দিন বাকী। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে নবীগঞ্জ উপজেলা জুড়ে জমে উঠেছে জমজমাট কোরবানির পশুর হাট।
সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নবীগঞ্জ পৌর এলাকার সালামতপুর, দিনারপুরের জনতার বাজার, সৈয়দপুর বাজার, নতুন বাজার, কাজিগঞ্জ বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বসতে শুরু করছে পশুর হাট। হাটগুলো ক্রেতাদের পদচারণায় সরগরম থাকলেও দাম সাধ্যের বাইরে থাকায় অনেক ক্রেতাই দাম কমার অপেক্ষা করছেন। তবে, দুই একদিনের মধ্যে ক্রেতারা কোরবানির পশু কিনতে শুরু করবেন বলে মনে করছেন হাটে পশু বিক্রি করতে আসা ব্যবসায়ীরা। নবীগঞ্জ পৌর এলাকার সালামতপুরে পশুর হাটে কথা হয় ক্রেতা বিক্রেতাদের সাথে। অন্যান্য বছরের তুলনায় দাম কিছুটা বেশি মনে করছেন এ হাটে আসা ক্রেতারা। লোক সমাগম অনেক হলেও বিক্রি জমে উঠেনি বলে জানালেন একাধিক বিক্রেতারা। ঈদ যত কাছে আসছে পশুর হাটের ভীড়ও আস্তে আস্তে বেড়েই চলছে। শেষ মুহুর্তে আরো বেশি ভিড় বাড়বে এবং রাতব্যাপী বেচা-কেনা চলবে বলে জানিয়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতা ও গরুর বাজার কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে, বাজার গুলোতে জাল টাকা শনাক্তকরণে কোনো যন্ত্র না থাকায় ক্রেতা-বিক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
পশুর হাট-ঘুরে আরো দেখা যায়, সম্পূর্ণ হাট ছিল গরু, ছাগলসহ বিভিন্ন পশুতে পরিপূর্ণ। তবে, দাম বেশি থাকায় মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত মানুষকে হিমশিম খেতে দেখা গেছে।
অন্য বছরের তুলনায় এবার দাম একটু বেশি। অনেক ক্রেতাদের কোরবানির পশু না কিনে খালি হাতে ফিরে যেতে হয়েছে। বাজারে দাম বেশি থাকায় অনেক বিক্রেতাকে ও তাদের আমদানিকৃত গরু বিক্রি না করে ফিরিয়ে বাড়িতে নিয়ে যেতে হয়েছে। এদিকে, ডিজিটাল তথ্য প্রযুক্তি ছোঁয়ায় আরো একধাপ এগিয়ে জমে উঠেছে পশুর হাট। অনেকেই স্মার্ট ফোনে ফোর-জি, থ্রি জি নেটওয়ার্কের আওতায় ইমো, স্কাইপিসহ বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে ভিডিও কলে দেশ- বিদেশে বাড়িতে থাকা স্বজনদের গরু দেখাচ্ছেন এবং তারা ভিডিও কলে গরু দেখে দেখে পছন্দ করছেন কোনটা কিনবেন। এ ছাড়াও অনেকেই গরুর ছবি তুলে ওয়ারর্সাপ আপের মাধ্যমে তাদের স্বজনদের শেয়ার করছেন। উপজেলার সদর ইউনিয়নের মতিন মিয়া নামে এক বিক্রেতা জানান, সিলেটে বিভিন্ন জায়গায় আংশিক বন্যার কারণে গরুর বাজারে দুরের মানুষ গুলো আসতে না পারায় বাজারে অনেকটা ক্রেতা শুন্যতা দেখা যাচ্ছে। উপজেলা বাউসা ইউনিয়নের আলম নামে এক ক্রেতা জানান, দেশীয় গরু কিনতে বাজারে এসেছি, বাজারে দাম খুব বেশি তাই কোরবানির গরু কিনতে হিমশিম খাচ্ছি। আগামী বাজারে দাম আরো কমতে পারে বলে মনে করেন তিনি। সালামতপুর বাজারে সাবু মিয়া নামের এক গরু বিক্রেতা জানান, দীর্ঘদিন ধরে গরু লালন-পালন করেছি লাভের আশায়, যদি ভারতীয় গরু বাজারে না আসে তাহলে আমাদের দেশীয় গরুগুলো ন্যায্য মূল্য পাবো বলে আশাবাদী।
নবীগঞ্জ উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা মোঃ সাইফুর রহমান জানান, নবীগঞ্জে পশু কোরবানি চাহিদা প্রায় ১৩ হাজার ৫শ যা লালন পালন হয়েছে সাড়ে ১৬ হাজারের বেশি পশু রয়েছে। ক্রেতারা গরু কিনতে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা না।