সিলেট পোস্ট রিপোর্ট: শিমন মিয়া নামের এক সিঙ্গাপুর প্রবাসীকে অপহরণের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট নয় জন শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। অপহৃত দুজনসহ তাদের কাছ থেকে ছয়টি মোবাইল ফোন সেট ও একটি মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়।
র্যাব-১ এর অপস অফিসার এএসপি মোহাম্মদ কামরুল হাসান জানান, গোপন সংবাদ পেয়ে র্যাব-১ এর একটি দল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মহিউল ইসলাম ও সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে সোমবার দুপুরে গাজীপুরের জয়দেবপুরে অভিযান চালায়।
জয়দেবপুরের ভাওরাইদ দক্ষিণপাড়া প্রতিবন্ধী নগর সড়কে তিন মাথা এলাকা থেকে উত্তরার আইইউবিএটি’র ছাত্র শেখ শাহিন (২৬), তারিকুর রহমান (২২), মো. রকি ওরফে জীবন (২০), আবু তারেক (২৫), সঞ্জয় রায় (২৩), আল আমিন (২২), সাবরিনা কবির ওরপে মৌমিতা (২০), ডুয়েটের ছাত্র শেখ সাকিব (২৩) এবং উত্তরা ইউনির্ভাসিটির ছাত্র মো. কাইয়ুম (২৪) গ্রেফতার করেন র্যাব কর্মকর্তারা। পরে তাদের দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী অপহৃত শিমন মিয়া (২৮) ও তার চাচাতো ভাই মো. সাদ্দামকে (২৪) উদ্ধার করেন তারা।
র্যাব কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানান, গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ থানার মোক্তারপুরের ফটিক মিয়ার ছেলে শিমন মিয়া (২৮) গত ৫ মে সিঙ্গাপুর থেকে দেশে আসেন। দেশে আসার পর গ্রেফতারকৃত শেখ শাহীনের বন্ধু মো. সাব্বির (২৫) সিঙ্গাপুর থেকে মোবাইল ফোনে তাদের জানান, শিমন মিয়ার কাছে তিনি দুই লাখ টাকা পাবেন। টাকা না দিয়ে শিমন সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশে চলে আসেন।
সাব্বিরের ফোন পাওয়ার পর শেখ শাহীন তার বান্ধবী সাবরিনা কবির ওরফে মৌমিতাকে (২০) দিয়ে শিমন মিয়াকে ফোন করান। মোবাইল ফোনে কল করে পূর্ব পরিচিতির ভাব দেখিয়ে তার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার চেষ্টা করতে থাকে। একপর্যায়ে তার সঙ্গে দেখা করার জন্য গাজীপুরের জয়দেবপুর কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের গেটের সামনে আসতে বলেন।
মৌমিতার কথা অনুযায়ী শিমন মিয়া তার চাচাতো ভাই মো. সাদ্দামকে নিয়ে সোমবার সাড়ে ১১টার সময় কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সামনে উপস্থিত হন। পরে সেখান থেকে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয় দিয়ে আট-নয়জন শিমন ও সাদ্দামকে মাইক্রোবাসে তুলে চোখ বেঁধে জয়দেবপুরের ভাওরাইদ বনের ভেতরে নিয়ে যায়। এ সময় তাদের কাছে থাকা সাড়ে চার হাজার টাকা ও একটি সোনার চেন ও আংটিও নিয়ে নেয় তারা।
বনের ভেতর নিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে শিমনকে তারা বলে, ‘তোর বড় ভাই সিঙ্গাপুরে থাকে। তাকে পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে আসতে বল। না হয় তোর হাত-পা কেটে ফেলব।’ এসময় পাশের আমবাগানে কর্মরত একজন নারী ঘটনাটি দেখে স্থানীয় লোকজনকে অবহিত করেন।
পরে স্থানীয়রা পোড়াবাড়ী র্যাব ক্যাম্পে খবর দেয়। স্থানীয়দের সহযোগিতায় র্যাব ঘটনাস্থল থেকে তাদের উদ্ধার অপহরণকারীদের গ্রেফতার করে। আসামিদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আইইউবিএটি’র ছাত্রী সাবরিনা কবির মৌমিতাকে (২০) উত্তরার ১০ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর রোডের ৪৯ নম্বর বাসা থেকে গ্রেফতার করে তারা।